এলাকা পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তৎপরতার মধ্যেই বর্ষায় ডেঙ্গি দমনে মাঠে নেমে পড়ল প্রশাসন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে জমা জলের উৎস সন্ধান এবং নোংরা-পচা ডোবা বা পুকুরের সমীক্ষা শুরু করেছেন গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা। অতীতে ডেঙ্গির ভয়াবহতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আগাম ডেঙ্গির লার্ভা ধ্বংস করার চেষ্টায় কাজ শুরু করছে ব্লক প্রশাসন। প্রয়োজনে ছড়ানো হচ্ছে মশা মারার তেল ও জীবাণুনাশক।
বর্ষার শুরুতে গ্রাম থেকে শহরে মশার উপদ্রব বাড়ে। এই সময় ম্যালেরিয়া থেকে ডেঙ্গি প্রভৃতি মশাবাহিক রোগের প্রকোপও বাড়ে। ডোবা, নর্দমা থেকে যেখানে জল জমে থাকে সেখান প্রতি বছর ডেঙ্গি ছড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থায় রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা। তার উপর ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিলে আরও বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। তাই করোনা সংক্রমণ রোখার চেষ্টার পাশাপাশি ডেঙ্গি নিয়েও তৎপর রাজ্য।
এমনিতে সারা বছরই কমবেশি ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনা প্রচার চালায় বিভিন্ন পুরসভা এবং ব্লক প্রশাসন। এগরা পুরসভায় ডেঙ্গি দমনে আলাদা করে স্বাস্থ্য বিভাগের দল তৈরি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা দু’একদিনের মধ্যেই এসে যাবে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে ও কালবৈশাখীর কারণে মাঝেমধ্যেই দু-এক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে। মরসুমী বৃষ্টি শুরুর আগে গ্রাম ও শহরে জমা জল ও নোংরা ডোবাগুলিতে জীবাণুনাশক ছড়ানো হলে শুরুতেই মশার উপদ্রব কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই লক্ষ্যেই ডেঙ্গি দমনে আগাম মাঠে নেমেছে ব্লক প্রশাসন। পুর এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মী এবং ব্লকে গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা ডেঙ্গি সচেতনতায় বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালাচ্ছেন। বাড়িতে ফুলের টব-সহ একাধিক জায়গায় জল জমে থাকলে তা ফেলে দেওয়ার কাজ করছেন তাঁরা। বাড়ির পাশে নর্দমা, ডোবা-পুকুর থাকলে সেখানে ব্লিচিং ও কীটনাশক ছেটানো হচ্ছে। ডেঙ্গি সচেতনতায় লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।
এগরা পুরসভা এলাকায় কোথাও জল জমে থাকলে সেখানে মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। বর্ষা নামার আগেই পুরোদমে ডেঙ্গি সচেতনতা ও জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ চলবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। মশার উপদ্রব আটকাতে প্রয়োজনে মশা মারা কামান ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে এগরা পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। ২০১৯ সালে পটাশপুর-২ ব্লকে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েই এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। করোনা পরিস্থিতিতে অতীতের শিক্ষা নিয়েই আগাম ডেঙ্গি দমনে প্রশাসন সচেষ্ট হয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
পটাশপুর-২ এর বিডিও শঙ্কু বিশ্বাস বলেন, ‘‘সারা বছর ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনার কর্মসূচি চলে। এ বার বাড়তি গুরুত্ব দিতে গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর্মীরা বাসিন্দাদের সচেতন করা সহ জমা জল ফেলে দেওয়ার কাজ করছেন। ডোবা-পুকুরে মশার লার্ভা ধ্বংসে কীটনাশক ও মশা মারার তেলও ছড়ানো হচ্ছে। বর্ষা পুরোপুরি নামার আগে পুরোদমে এই কাজ চলবে।’’