পথে শুয়ে অবরোধ। ঘাটালে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা ।
কৌশল সেই এক। সকালেই মাঠে নেমে পড়া। তারপর কোথাও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, কোথাও বা পুলিশকে ফুল উপহার। রাস্তায় চলল ক্রিকেটও।
শুক্রবার ১২ ঘণ্টার হরতালে এ ভাবে পথে রইলেন বামেরা। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর হোক বা ঝাড়গ্রাম সে ভাবে পথ আটকায়নি প্রায় কোথাও। প্রভাব পড়েনি। তবে উপস্থিতি জানান দিয়েছে বামেরা। সঙ্গী ছিল কংগ্রেসও।
বৃহস্পতিবার বাম ছাত্র-যুবদের নবান্ন অভিযানে ‘পুলিশি হামলা’র প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যে ১২ ঘন্টা হরতালের ডাক দেয় বামেরা। মেদিনীপুর শহরে সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলেন ধর্মঘটীরা। কর্তব্যরত পুলিশের হাতেই গোলাপ ফুল তুলে দিয়েছেন বাম ছাত্র- যুবরা। মেদিনীপুরে বেসরকারি বাস তেমন পথে নামেনি। সকালের দিকে শহর, শহরতলির কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল। বেলার দিকে সেগুলি খুলেছে। কালেক্টরেট মোড়ে রাস্তায় ক্রিকেট খেলতেও দেখা গিয়েছে ধর্মঘটীদের। কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা মেদিনীপুরে বাইক মিছিল করেছেন।
ঘাটাল মহকুমায় সকাল থেকে রাস্তায় নেমে যানবাহন আটকাতে শুরু করেন বাম কর্মীরা। নিত্যযাত্রী ও সরকারি কর্মীরাও আটকে পড়েন বিভিন্ন স্ট্যান্ডে। ঘাটালে দোকানপাট আংশিক খোলাই ছিল। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাইয়ে মিছিল করে সরকারি ও আধা সরকারি দফতরের সামনে ঘেরাও করে রাখেন বাম কর্মীরা। কোথাও কোথাও আবার সরকারি অফিসে বামদের পতাকা টাঙিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ অবশ্য পতাকা সরিয়ে অফিস খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। হাজিরা স্বাভাবিক থাকায় সরকারি দফতরগুলিতে কাজে বিঘ্ন হয়নি।
খড়্গপুর শহর সকাল থেকেই ছিল সচল। শহরে বামদের মিছিলে বাধা দিতে যাওয়ায় শহরের আইআইটি বাইপাস ও ইন্দায় পুলিশের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। পরে অবরোধ শুরু হতেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বাম কর্মীদের। বাস, ট্রেন থেকে অটো চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। খড়্গপুরের উপকন্ঠে থাকা একাধিক শিল্পতালুকে বন্ধের প্রভাব পড়েনি। একই ছবি ছিল গড়বেতার তিনটি ব্লক ও বেলদা, কেশিয়াড়ি, দাঁতন ও মোহনপুরে।
ঝাড়গ্রাম জেলায় মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে। বেসরকারি বাস বন্ধ থাকলেও সারাদিন সরকারি বাস চলেছে। জেলাশহরে কিছু দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বাকি দোকান ছিল খোলা। শহরে সব অফিস খোলা ছিল। তবে বেলপাহাড়ি ও শিলদায় বামেদের সাবেক ঘাটিগুলিতে এ দিন অবশ্য হরতালের প্রভাব পড়েছিল। তবে গোপীবল্লভপুর ও বেলিয়াবেড়া, নয়াগ্রাম ও সাঁকরাইলে জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সভার জন্য সারা জেলা থেকে তৃণমূল কর্মীরা বাসে করে এসেছিলেন।