দুর্গাপুজোর আর বেশি বাকি নেই। কিন্তু করোনা আবহে এখনও জমেনি কেনাকাটা। রবিবার দুপুরে খড়্গপুরের গোলবাজারে। ছবি: কিংশুক আইচ
করোনা আবহে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই টাকা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট পুজোর সরকারি অনুমোদন দরকার। কিন্তু নিয়মের গেরোয় বহু পুজোর সরকারি অনুমোদন নেই। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা অনুদান শেষ পর্যন্ত তহবিলে আসবে কি না, বুঝে উঠতে পারছেন না অনেক পুজো কর্তাই।
পুলিশ-প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, হাইকোর্টের এক রায় ও সরকারি কিছু বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই নতুন করে পুজোর অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে বহু পুরনো পুজো কমিটিরও অনুমোদন জোটেনি। ঘাটাল মহকুমায় প্রায় শতাধিক এরকম অনুমোদনহীন পুজো আছে। তাদের মধ্যে ৩০-৩৫ বছরের পুরনো পুজোও আছে। এত বছরের পুরনো পুজো এর আগে অনুমোদন নেয়নি কেন? সংশ্লিষ্ট পুজোর কর্তাদের একাংশের ব্যাখা, আগে পুজোর অনুমোদনের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতো। আর সরকারি ভাবে অনুদানের সেরকম ব্যবস্থা ছিল না। তাই অনুমোদন পাওয়ার দিকে তেমন চেষ্টা করা হয়নি। ভাবা হয়েছিল, পরে কোনওসময়ে করে নিলেই হবে। কিন্তু অনুমোদন দেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে সুযোগ আর হয়নি।
পুলিশের তথ্য বলছে, ঘাটাল থানা এলাকায় দুর্গাপুজোর সংখ্যা ১৫২টি। এদের মধ্যে ৭০-৭২টি পুজোর অনুমোদন রয়েছে। ১৭টি পারিবারিক পুজো। বাকি পুজোগুলির অনুমোদন নেই। দাসপুর থানা এলাকায় ১৮০টি পুজোর মধ্যে অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা মাত্র ৯২টি। চন্দ্রকোনা থানা এলাকাতেও অনুমোদন নেই এমন প্রায় ৪২টি পুজো হয়।
দাসপুরে এক পুজো উদ্যোক্তার আক্ষেপ, “আমরা যাবতীয় নিয়ম মেনেই পুজো করি। কিন্তু প্রশাসন থেকে অনুমোদন না দিলে কী করার আছে। সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।”
ঘাটালের কামারগেড়িয়া পুজো কমিটির কর্তা রাকেশ ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের ১৮ বছরের পুরনো পুজো। পুজোর সময়ে অনুষ্ঠানও হয়। কিন্তু আবেদন করেও অনুমোদন পাইনি। সরকারি অনুদান পাব কি না বুঝতে পারছি না।” চন্দ্রকোনার শ্রীনগরের একটি পুজোর উদ্যোক্তা প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় আবার বলেন, “এবার প্রথম পুজো শুরু করব। তবে অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না।”
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক মানছেন, “নতুন করে পুজোর অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে বহু কমিটি সমস্যায় পড়েছেন।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, অনুমোদনহীন পুরনো পুজোগুলি যাতে সরকারি অনুদান পেতে পারে তার জন্য নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করা হবে।
কী সেই পদক্ষেপ? ওই আধিকারিক জানান, অনুমোদন নেই অথচ বয়স ১০ বা তার বেশি, এরকম বেশ কিছু পুজোকে এর আগেও সরকারি অনুদান দেওয়া হয়েছিল। এ বারও সেরকম কিছু হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিকে বিগত সব বছরের পুজোর খতিয়ান দেখাতে হবে।