দূর্বাচাটি নদী। নিজস্ব চিত্র।
বহু প্রতীক্ষার পরেও বাস্তবায়ন হয়নি ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে’র। কিন্তু পরিকল্পনার আওতাভুক্ত দূর্বাচাটি নদী সংস্কারের কাজ শুরু হতে চলেছে চলতি মাসেই। সে জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে ৮০ কোটি টাকা।
দাসপুর-১ ব্লকের বাঁশখাল থেকে দাসপুর-২ ব্লকের শ্রীবরা পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার অংশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দূর্বাচাটি নদী। ‘ওল্ড কাঁসাই’ নামে পরিচিত দূর্বাচাটি নদীকে স্থানীয়েরা খাল বলতেই অভ্যস্ত। নদীর এক প্রান্তে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-১ এবং ২ ব্লক। আরেক প্রান্তে রয়েছে পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাট। রূপনারায়ণ নদের জোয়ারের জল নিয়মিত দূর্বাচাটিতে মধ্যে ঢোকে। সেই জলে নদীর দু’পাশের বিস্তীর্ণ চরে ধান, ফুল ও আনাজ চাষ হয়।
স্থানীয়ের জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্ষার সময় অল্প বৃষ্টিতেই দূ্র্বাচাটি ফুলে ফেঁপে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কংসাবতী জলাধার থেকে জল ছাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এই নদীটি ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে’র আওতায় সংস্কারের কথা ছিল। কিন্তু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এখনও সাফল্যের মুখ দেখেনি। তাই রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকে এক একটি নদী এবং খাল সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, দূর্বাচাটি নদীটি সংস্কারে জন্য ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য অর্থ দফতর। ইতিমধ্যে কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ও বেরিয়ে গিয়েছে। কালীপুজোর পর শুরু হবে কাজ। সম্প্রতি দাসপুর-১, ২, পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের সমস্ত জন প্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছে সেচ দফতর। বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার করে নদীর ধারে থাকা সমস্ত বেআইনি দখলদারি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। আগামী বর্ষার মধ্যেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
সেচ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুমিত দাস বলেন, ‘‘আমরা চলতি মাসেই কাজ শুরু করব। কাজ শেষ করার জন্য ছমাসের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। নদীটি সংস্কারের কাজ শেষ হলে দুই মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার সেচ ও নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।’’ সেচ দফতরে উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘দূর্বাচাটি নদী সংস্কার হলে দুই মেদিনীপুরের অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবেন। আমাদের দাবি সেচ দফতর এই সংস্কার কাজের জন্য একটি তদারক কমিটিও গঠন করুক।’’