প্রতীকী ছবি।
ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য বিশেষ শিবির হয়েছে। শিবিরে বিপুল আবেদন জমা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।
আবেদনের সংখ্যাটা দেড় লক্ষেরও বেশি বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। এনআরসি আতঙ্কের আবহেই এত আবেদন জমা পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি মানছেন, ‘‘বিশেষ শিবিরে বিপুল আবেদন জমা পড়েছে।’’
জেলা প্রশাসন অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, রেশন কার্ডের আবেদন কিংবা ভোটার তথ্য যাচাইয়ের সঙ্গে এনআরসি- র কোনও সম্পর্ক নেই। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামে গ্রামে এ ব্যাপারে লোকজনকে সচেতনও করা হয়েছে। তার পরেও অবশ্য ভয় কাটছে না অনেকেরই। অমূল্য বলেন, ‘‘এনআরসি- র সঙ্গে ডিজিটাল রেশন কার্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রীও স্পষ্ট বলেছেন, এ রাজ্যে এনআরসি হতে দেবেন না। তারপরও কারও কারও ভয় কাটছে না। ভয় কাটানোর সব রকম চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামে গ্রামে লোকজনকে সচেতন করা হয়েছে।’’
শুরুতে ১৮ দিনের বিশেষ শিবির হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যেই ওই বিপুল আবেদন জমা পড়েছে। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। সেই মতো ফের ৫ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিশেষ শিবিরে আবেদন জমা নেওয়া হবে।
বস্তুত, খাদ্যসাথী প্রকল্পের জন্য নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করেছে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। শিবিরে নতুন ডিজিটাল কার্ডের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে। যে সব ডিজিটাল রেশন কার্ডে কোনও ভুল রয়ে গিয়েছে, সেগুলিরও সংশোধনের আবেদনপত্রও একই সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।
ঠিক কোন বিষয়ে কত আবেদন জমা পড়েছে?
প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬১,০৭৫টি আবেদন জমা পড়েছিল। এরমধ্যে ভর্তুকি যুক্ত খাদ্য প্রাপকের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন ছিল ৩,৬২৩টি। পরিবারের নতুন সদস্য সংযোজন করার জন্য আবেদন ছিল ২০,০৭৫টি। নাম বা ঠিকানার ভুল সংশোধন করার জন্য আবেদন ছিল ২৯,৮৫৫টি। ডিলার পরিবর্তনের জন্য আবেদন ছিল ২,৬১১টি। কার্ড বাতিল করার জন্য আবেদন ছিল ১০৫টি। বিকল্প কার্ড দেওয়ার আবেদন ছিল ১,১৮৯টি।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘এনআরসি নিয়ে একটা আতঙ্ক রয়েছে। সম্ভবত তাই এ ক্ষেত্রে এত আবেদন জমা পড়েছে।’’