বালিচক রেলগেটের কাছে উড়ালপুল নির্মাণের জন্য বিকল্প রাস্তা গড়ার কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র।
রেল-রাজ্য টানাপড়েনে একবছর ধরে থমকে উড়ালপুলের নির্মাণকাজ। রেললাইনের উপরের অংশে উড়ালপুল গড়তে ওভারহেড তার থেকে রেলগেট সরাতে হবে রেলকে। অথচ সেই কাজে টালবাহানা চলছেই। এমন পরিস্থিতিতে অসমাপ্ত উড়ালপুলের সার্ভিস রোড দিয়ে যাতায়াত অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
ডেবরার বালিচক উড়ালপুলের কাজ ঘিরে রেল-রাজ্য সমন্বয়ের অভাবে অতিষ্ট এলাকাবাসী। দীর্ঘ দাবির পরে খড়্গপুর-হাওড়া শাখার ব্যস্ততম স্টেশন বালিচকে রেলগেটের যানজট কাটাতে উড়ালপুল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯ সালে রাজ্যের পূর্ত দফতর কাজে হাত দেয়। বিপর্যস্ত হয় ডেবরা-সবং সড়কের মাঝে ওই এলাকায় যান চলাচল। তবে চার বছরেও কাজ শেষ হয়নি। এখন রেললাইনের উপরের অংশের উড়ালপুল গড়া বাকি। ২০২২ সালের এপ্রিলে রেলকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয় বলে দাবি পূর্ত দফতরের। তবে রেলের গড়িমসিতেই গত একবছরে রেললাইনের ওভারহেড তার, রেললাইনের নীচে থাকা অজস্র তার ও রেলগেট সরানো হয়নি
বলে অভিযোগ।
পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিলয় মণ্ডল বলেন, “সম্প্রতি রেল ওভারহেড তার সরানোর কাজ করেছে। এতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। রেল বলছে রেলগেট সরাতে আমাদের নোটিস জারি করতে হবে। আমরা বিকল্প রাস্তা গড়ে দিয়েছি। রেলের সঙ্গে কয়েকদিনের মধ্যেই আলোচনায় বসব।”
খড়্গপুর রেল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরণ অবশ্য বলেন, “রেললাইনের উপর নির্মাণকাজ হলে শুধু তার বা রেলগেট সরালেই হবে না, ট্রেন চলাচলও বন্ধ করতে হবে। ওইখানে আর দেড় ঘণ্টার কাজ বাকি রয়েছে। রাজ্য তার বাকি কাজ করলেই ওটা হয়ে যাবে।” তবে ডেবরার বিডিও প্রিয়ব্রত রাঢ়ী বলেন, “রেল কাজে কিছুটা এগিয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটা ইতিবাচক পর্যায়ে আমরা যাব।”
রেল-রাজ্য সমন্বয়ের এই অভাবে বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী থেকে পথচলতি মানুষজন। উড়ালপুলের জন্য আন্দোলন চালিয়েছে বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটি। তারা জানাচ্ছে, নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের নীচে দু’দিকের সার্ভিস রোড একেবারে বেহাল। ধুলোয় ঢাকছে দোকানপাট থেকে ঘরবাড়ি।
বিষয়টি নিয়ে বারবার রেলের সঙ্গে আলোচনা করেছে এই কমিটি। রাজ্য প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছে। বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “রেল-রাজ্যের সমন্বয়ের অভাবে কাজ থমকে রয়েছে একবছর। দু’পক্ষ নিজেদের জায়গা আঁকড়ে রয়েছে। তারা মানুষের ভোগান্তি নিয়ে উদাসীন।”