প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে এখনও স্কুল বন্ধ। কবে খুলবে ঠিক নেই। সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল বিলি অবশ্য থেমে নেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি শিক্ষাবর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুরে এই প্রকল্পে ৭২,২২৬টি সাইকেল বিলি হওয়ার কথা। এরমধ্যে এখনও পর্যন্ত ১১ হাজার সাইকেল এসেছে। জেলায় আসা ১১ হাজার সাইকেলই ইতিমধ্যে বিলি করা হয়েছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘সবুজসাথী প্রকল্পের যে সাইকেল এসেছে তা বিলি করা হয়েছে।’’ শীঘ্রই আরও সাইকেল জেলায় আসার কথা।
করোনা আবহে চলতি শিক্ষাবর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি ব্লকে সাইকেল বিলি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ওই সূত্রে খবর, যে ১১ হাজার সাইকেল এসেছিল তা ওই ৬টি ব্লকে পাঠানো হয়েছিল। চলতি শিক্ষাবর্ষে চন্দ্রকোনা- ১ ব্লকে ২,৬২৫টি সাইকেল বিলি হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ১,২০০টি সাইকেল বিলি হয়েছে। কেশপুরে ৬,৩২৭টির মধ্যে ২,৪০০টি, খড়্গপুর-১ এ ১,৭৩৫টির মধ্যে ১,২০০টি, মেদিনীপুরে (সদর) ৫,৫৬৫টির মধ্যে ২,৪০০টি, সবংয়ে ৪,৩৮৬টির মধ্যে ২,৪০০টি এবং শালবনিতে ৩,৩২৭টির মধ্যে ১,৪০০টি সাইকেল বিলি হয়েছে। জেলায় আরও ৬১,২২৬টি সাইকেল আসার কথা। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় সাইকেল এলেই তা ব্লকে ব্লকে পাঠানো হবে। শুধু চলতি শিক্ষাবর্ষের নয়, করোনা পরিস্থিতিতে গত শিক্ষাবর্ষেরও কিছু সাইকেল বিলি হয়েছে। কেমন? মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ায় জেলায় কিছু সাইকেল বিলি বাকি ছিল। সে সময় দেখা গিয়েছিল, ২০১৯- ’২০ শিক্ষাবর্ষে এ জেলায় সবুজসাথী প্রকল্পে ৬৮,৭১১টি সাইকেল বিলি হওয়ার কথা। লকডাউনের আগে পর্যন্ত বিলি হয়েছিল ৬৬,৮১৩টি। বাকি ১,৮৯৮টি সাইকেল বিলি বাকি ছিল। তা পরে বিলি হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, সাইকেল বিতরণ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আর্থ-সামাজিক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম সবুজসাথী। রাজ্যের সব জেলায় সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পায়। ২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নবম শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হবে। সেই মতো স্কুল তাদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয় সংশ্লিষ্ট দফতরে। এরপর সংশ্লিষ্ট দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে। জেলা থেকে সাইকেল পৌঁছয় ব্লকে, ব্লক থেকে স্কুলে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো ২০১৫ সাল থেকে সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলি চালু হয়। এ বার শুরুর দিকে উপভোক্তা-পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি সাইকেল বিলি করা হয়েছে। পরে কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিনে স্কুলে কিংবা ব্লক অফিসে এসেছে সাইকেল নিয়ে গিয়েছে উপভোক্তা-পড়ুয়ারা।
প্রশাসনের দাবি, করোনা-বিধি মেনেই সাইকেল বিলি হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতের সুবিধার জন্যই রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প। তবে বিলি হওয়া সাইকেলের মান নিয়েও কখনও কখনও প্রশ্ন ওঠে। কখনও দেখা যায়, সাইকেলের চাকায় হাওয়া নেই, হ্যান্ডেল বেঁকে গিয়েছে। কখনও দেখা যায়, স্ট্যান্ড ঢুকে গিয়েছে, ব্রেক ঝুলে গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিলির আগে সাইকেল কিছু দিন এক জায়গায় পড়ে থাকে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও সাইকেল খারাপ হয়ে গেলে মেরামত করেই তা ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’