প্রতীকী ছবি
রাজ্য জুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। জেলাতেও ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। শিল্পশহর হলদিয়ায় ভিন্ রাজ্য এবং ভিন্ জেলা বহু লরি এবং ট্যাঙ্কার চলাচল করে। অভিযোগ, এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের আলাদা কোনও নজরদারি নেই। ফলে শহরবাসীর মনে এখন দুশ্চিন্তার মেঘ।
এখনও পর্যন্ত হলদিয়া টাউনশিপে সে ভাবে থাবা বসাতে পারেনি করোনা। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে— তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শহরবাসী। উল্লেখ্য, সপ্তাহ কয়েক আগেই ওড়িশা থেকে আসা এক ট্যাঙ্কার চালকের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। অবশ্য চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবুও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, লকডাউনের সময় ভিন্ রাজ্যের গাড়ি আসলেও চালকরা সে ভাবে বাইরে বেরোতেন না। কিন্তু এখন লকডাউন শিথিল হয়ে যাওয়ায় লরি এবং ট্যাঙ্কার চালকেরা গাড়ি নিয়ে কারখানাগুলোতে আসছেন এবং অবাধে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশছেন। তাঁরা স্থানীয় সেলুনে চুল-দাড়ি কাটছেন, চা দোকানে বসে চা খাচ্ছেন। আর এতেই ভয় বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
পুরসভার পক্ষ থেকেও তেমন কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তবে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, কিছু কিছু জায়গায় স্বাস্থ্য কর্মী মোতায়েন করে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু উপসর্গহীনদের ক্ষেত্রে কী হবে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তথ্য বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা উপসর্গহীন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেহের নমুনা সংগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে। বাইরে থেকে আসা চালকেরা যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা না করেন, সে ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করা উচিত।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘যে সব শিল্প সংস্থায় বাইরে থেকে ট্রাক আসছে, সেই সব শিল্প সংস্থা আমাদের কাছে নমুনা পরীক্ষার জন্যে পাঠালে স্বাস্থ্য দফতর নমুনা পরীক্ষা করার জন্য হাত বাড়িয়েই আছে।’’
হলদিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উপসর্গহীনদের স্বাস্থ্য দফতর নমুনা পরীক্ষা করছে না। ট্রাক চালকদের নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুলিশ ভাবনাচিন্তা করছে।’’
হলদিয়া পুরসভার স্বাস্থ্য পুর-পারিষদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘‘বড় বড় কারখানাগুলিতে যেখানে সংখ্যা বেশি সংখ্যক লরি আসে, সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরা চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। কেন্দ্র ও রাজ্যের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গাইডলাইন মেনেই কাজ করছে পুরসভা।’’