Adenovirus

মেডিক্যালে শিশু মৃত্যুর রিপোর্টে বাড়ছে উদ্বেগ

ভেন্টিলেশনে রয়েছে ১ জন, ‘পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ বা পিকু- তে রয়েছে ২ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এআরআই উপসর্গ নিয়ে শিশু ভর্তির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ০৫:৪৩
Share:

ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে শিশুদের বহির্বিভাগে ঠাসা ভিড়। নিজস্ব চিত্র

অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। হাসপাতালগুলির শিশু বিভাগের সাধারণ শয্যা প্রায় ভর্তি। জ্বর- সর্দি- কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত কয়েকজন শিশু ভর্তি ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটেও। এই অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ৫ জন শিশুর প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। ওই শিশুরা অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিল। পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই শিশুদের কেউ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তবে ৫ জনের মধ্যে ২ জনই প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত বলে রিপোর্টে উল্লেখ।

Advertisement

উদ্বেগ বেড়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায়। বুধবার বিকেলে মেডিক্যালের এক আধিকারিক মেনেছেন, ‘‘গত ২৪ ঘন্টায় এখানে বেশ কয়েকজন শিশু ভর্তি হয়েছে। নানা উপসর্গ নিয়ে। আর একজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’’ ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘তবে রেসপিরেটরি ইনফেকশনে নয়, মাস দুয়েকের ওই শিশু সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিল। সেপ্টিসেমিয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’’ তিনি মনে করাচ্ছেন, ‘‘সাধারণত, ব্যাকটিরিয়াজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে সেপ্টিসেমিয়ার কথা বলা হয়। ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে নয়। ফুসফুস, কিডনি, খাদ্যনালি বা অন্য যে কোনও অঙ্গের সংক্রমণ যখন রক্তে প্রবেশ করে, তখন তাকে সেপ্টিসেমিয়া বলা হয়।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘৫ জনের নমুনা ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল। রিপোর্ট এসেছে। ৫ জনের মধ্যে ২ জনের প্যারা- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে। অ্যাডিনোভাইরাসে এদের কেউ সংক্রমিত নয়। ফলে, উদ্বেগের কিছু নেই।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারাপদ ঘোষ বলেন, ‘‘অযথা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই। জ্বর- সর্দি- কাশি নিয়ে ভর্তি থাকা শিশুদের মধ্যে কিছুজনের শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসা চলছে।’’

মেডিক্যাল সূত্রে খবর, চিকিৎসাধীনদের মধ্যে থেকে ১০ মাসের একটি ছেলের, ১ বছর ৫ মাসের একটি মেয়ের, ২ মাস ১৭ দিনের একটি ছেলের, ১ মাস ১৫ দিনের একটি ছেলের, ৯ বছরের একটি মেয়ের প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ বছর ৫ মাসের মেয়েটি এবং ১ মাস ১৫ দিনের ছেলেটি প্যারা- ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত। ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) উপসর্গযুক্ত শিশুদের উপর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। এআরআই উপসর্গ নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৮৬ জন শিশু। এরমধ্যে ২৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে ওই দিনই। ওই ৮৬ জনের মধ্যে ৩ জন শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক। তিনজনই মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। ভেন্টিলেশনে রয়েছে ১ জন, ‘পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ বা পিকু- তে রয়েছে ২ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এআরআই উপসর্গ নিয়ে শিশু ভর্তির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে।

Advertisement

মেডিক্যাল সূত্রে খবর, শীঘ্রই আরও ৫-৬ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হতে পারে। মেডিক্যালের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘আরও নমুনা ভাইরাল- প্যানেল পরীক্ষায় পাঠানো হতে পারে।’’ আবহাওয়ার পরিবর্তনই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের অনেকে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘জ্বর- সর্দি- কাশি নিয়ে বাচ্চারা আসছে হাসপাতালে। শ্বাসকষ্ট নিয়েও আসছে। দু’বছরের নীচের বাচ্চাদের সমস্যা বেশি। কোভিডের সময়ে শিশুদের চিকিৎসার জন্য জেলায় যে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল, প্রয়োজনে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement