রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে পুর্ণেন্দু মাজি। — ফাইল চিত্র।
শুধু অফিসে বসে ফাইল ঘাঁটলেই চলবে না। প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে গিয়ে সেখানে জনগণের অভাব-অভিযোগ শুনে তার প্রতিকারে সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে একটি সরকারি কর্মসূচিতে এসে মঙ্গলবার ব্লক আধিকারিক থেকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমনই বার্তা দিলেন জেলাশাসক পুর্ণেন্দু মাজি।
ভবিষ্যতে উদ্যোগপতি হয়ে উঠতে চান এমন ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-১ পঞ্চায়েতের উত্তম প্রামাণিক অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা যখন আমাদের কৃষি বিষয়ক সমস্যা নিয়ে ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরে যাই তখন আমাদের সারের দোকানে যেতে বলা হয়। সম্প্রতি আমার আমগাছে মুকুল আসা সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে আমি কৃষি দফতরে গিয়েছিলাম। যথারীতি আমাকে নিকটবর্তী সারের দোকানে যেতে বলা হয়। সারের দোকানি আমাকে তার দোকানের দামী সার গছিয়ে দেন। যদিও তাতে আমার কোনও উপকার হয়নি, উল্টে একগাদা টাকা খরচ হয়েছে সার কেনার জন্য।’’ উত্তমের আক্ষেপ, যদি কৃষি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী সরেজমিন সমস্যাটা খতিয়ে দেখতেন এবং তার ভিত্তিতে তাঁকে ওষুধ, সার ইত্যাদি সুপারিশ করতেন তাহলে এই সমস্যা এড়ানো যেতে পারত।
এরপরই জেলাশাসক বলেন, "জেলার সমস্ত স্তরের কর্মী-আধিকারিকদের প্রয়োজনে গ্রামে যেতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা থেকে এটা দেখা গিয়েছে, সরকারি অফিসের নিকটবর্তী মানুষরাই সাধারণত অফিসে আসা যাওয়া করেন। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, সুযোগ-সুবিধাগুলি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ জানতে পারেন না। বা পারলেও তার সুযোগ নিতে পারেন না। আধিকারিক, কর্মীদের তাই গ্রামগুলিতে যেতে হবে। সরকারের প্রকল্প, সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে।’’
উপস্থিত দর্শকরা জেলাশাসকের এমন ঘোষণায় কিছুটা আশ্বস্ত হলেও তাঁদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন, আদৌ কি জেলাশাসকের নির্দেশমতো দোরগোড়ায় দফতর যাবে?
জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অফ হর্টিকালচার তিথি দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের দফরের তরফে প্রায়ই চাষিদের সাথে সরাসরি কথা বলা হয়। এত বড় জেলায় কোনও চাষি যদি আওতার বাইরে চলে যান, সেই সব চাষির জন্য জেলাশাসকের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভিত্তিক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগনেওয়া হয়েছে।’’
জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর এগ্রিকালচার (অ্যাডমিন) স্নেহাশিস কুইলা বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ সঠিক নয়। জেলার প্রায় ১২ লক্ষ কৃষকভাইদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের কর্মী-আধিকারিকরাও গ্রামে যান। এলাকায় গিয়েই কৃষক ভাইদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে জেলাশাসকের নির্দেশমত চাষিদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলবে।’’