বড়দিনের গনগনি। নিজস্ব চিত্র
বড়দিনের পিকনিকে ভিড় জমেছে গনগনিতে। রান্না আর আড্ডায় জমে উঠেছে চত্বর। সেই আড্ডার ফাঁকেও উঠে এল নতুন নাগরিকত্ব আইনের জল্পনা-আলোচনা!
প্রতি বছরের মতো এ বারও শিলাবতী নদীর তীরে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই স্থানটিতে পিকনিক করতে এসেছিলেন আশপাশের বহু মানুষজন। গড়বেতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির হিসাবে বুধবার গনগনিতে এসেছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। যা অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সেই সব মানুষের মধ্যে অনেকের আলোচনায় এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ।
আরামবাগ থেকে এসেছিলেন সুপ্রিয়া বিশ্বাস, এসেছিলেন বাঁকুড়ার কলেজ ছাত্রী শালিনী ঘোষাল, চন্দ্রকোনার উদয় বিশ্বাসরা। তাঁদের আলোচনাতেও এসেছে সাম্প্রতিক সময়ের ওই আলাচিত বিষয়গুলি। তাঁদের কথায়, ‘‘বড়দিনের আনন্দটা আমাদের মতো অনেকেরই ভাল কাটছে না। যা সব আইন হচ্ছে, জমিজমা, বাস্তুভিটের কাগজপত্র ঠিকঠাক না থাকলে তো বিপদে পড়তে হবে।’’ আবার শ্রীরামপুরের সুদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্যাণ্ডেলের অমরেশ ঘোষালরা বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন আখেরে নাগরিকদেরই সুবিধা করবে, অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
এলাকাবাসীর পাশাপাশি বিদেশ থেকেও এ দিন পর্যটক এসেছেন গনগনিতে। ব্রিটিশ দম্পতি স্টিফেন এবং অ্যালেন হেগ গনগনির নৈসর্গিক সৌন্দর্যে অভিভূত। গনগনির টিলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমেই বলে ওঠেন, ‘অ্যামেজিং’। অ্যালেন লণ্ডনের অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক। তাঁর স্বামী অধ্যাপক ছিলেন। খড়্গপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এই দম্পতি ৬ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন। মঙ্গলবার খড়্গপুরে এসে তাঁরা সেই অর্থে নির্মিত ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন।
গনগনির রেকর্ড সংখ্যক ভিড়কে নিয়ন্ত্রণে ছিল প্রচুর পুলিশ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফারুখ মহম্মদের নেতৃত্বে পঞ্চায়েতের একটি প্রতিনিধি দল গনগনি যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকে প্রচারও করা হয়েছে।