মেদিনীপুর স্টেশনে ওভারব্রিজের সাথে দু’টি লিফটের উদ্বোধন করলেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন ডিআরএম মহম্মদ সুজাত হাসমি। নিজস্ব চিত্র।
রেলের অনুষ্ঠানে মেদিনীপুরে এসেছিলেন সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই অনুষ্ঠানে দুর্নীতি নিয়ে ফের তৃণমূলকে খোঁচা দিলেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘এগিয়ে বাংলা কেবল দুর্নীতিতে! একটার পর একটা নেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, যারা শয়ে শয়ে কোটি টাকার মালিক হয়ে বসে রয়েছে। সাধারণ মানুষের বাড়ির টাকা চুরি হয়েছে, শৌচালয়ের টাকা চুরি হয়েছে। চাকরি নেই, ব্যবসা নেই, মানুষ বাংলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।’’
মেদিনীপুর স্টেশনে মঙ্গলবার লিফটের উদ্বোধন করেন সাংসদ দিলীপ। ছিলেন খড়্গপুরের ডিআরএম এমএস হাশমি প্রমুখ। স্টেশন চত্বরে ভিড় করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তাপস মিশ্র, জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায়, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি আশীর্বাদ ভৌমিক প্রমুখ। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলেন নেতা-কর্মীরা। এতে অবশ্য আপত্তির কিছু দেখছেন না দিলীপ। তাঁর মতে, ‘‘বন্দেমাতরম বলবে, ভারত মাতা কি জয় বলবে, জয় শ্রীরাম বলবে, এতে ভারতবর্ষের পরিচিতির ব্যাপার রয়েছে। এতে কারও কষ্ট পাওয়ার ব্যাপার নেই! কেউ কেউ তো জয় বাংলাও বলে। মনটা ছোট করব কেন, বড় করতে হবে!’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘এটা বিজেপির সংস্কৃতি। উত্তর ভারতের সংস্কৃতি জোর করে বাংলায় আনার চেষ্টা চলছে। বাংলার মানুষ এই কারণেই এদের কোনও দিন সমর্থন করবে না।’’
রেলের তরফে এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়াকে। জুন অবশ্য আসেননি। দিলীপ বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সবকা সাথ, সবকা বিকাশের কথা বলে। আমরা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চাই। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠানে আমাদের বিরোধীদেরকে ডাকা হয় না।’’ এ নিয়ে তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি চলছে। দুয়ারে সরকার চলছে। বিধায়ক কোনও না কোনও কাজে নিশ্চয়ই ব্যস্ত আছেন।’’
সাম্প্রতিক কুড়মি আন্দোলনে রেলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। দিলীপের মতে, ‘‘এই ধরনের আন্দোলন পশ্চিমবাংলায় বেশি হয়। আমরা সিএএ- তে দেখেছি, নুপূর শর্মার ঘটনায় দেখেছি, রেলকেই টার্গেট করা হয়। রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা হয়। সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব এখানকার সরকারের। এখানকার সরকার সুরক্ষা দূর, কথা পর্যন্ত বলেন না।’’ ডিএ আন্দোলন নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘কতদিন আন্দোলন চলছে। এটা হয়তো রেকর্ড হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁদের দাবি কী পূরণ হবে? আমরা চাই, তাঁদের দাবি পূরণ হয়ে আন্দোলন শেষ হোক।’’
পাল্টা বিঁধছে তৃণমূলও। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির কথায়, ‘‘এসএসসি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের ঘর থেকে তো দিলীপ ঘোষের কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে। আগে নিজেদের ঘরটা দেখুক। তারপরে অন্যের দুর্নীতি নিয়ে ভাববে!’’