দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধাঁচে দিঘাতেও জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহে দিঘা সফরে এসে জগন্নাথঘাটের কাছে নতুন জগন্নাথ মন্দির তৈরির খুঁটিনাটি নিজে মুখেই বলে গিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, রাজ্যের পর্যটন দফতর থেকে মন্দির গড়ার অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
এ বার জেলায় এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ সরকারি উদ্যোগে এই মন্দির তৈরির যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। রবিবার তমলুকে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘সরকারি উদ্যোগে মন্দির হওয়া মোটেই উচিত নয়। আসলে হিন্দুদের জন্য কিছু করা মুখ্যমন্ত্রী দায় হয়ে গিয়েছে। মুসমিল তোষণ করতে করতে ভোট ব্যাঙ্ক সরে গিয়েছে। তাই হিন্দু তোষণ করতে চাইছেন উনি।’’ নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধতেও ছাড়েননি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দিঘায় নতুন মন্দির না করে কোথায় গাঁজার ঠেক, মদের ঠেক হচ্ছে, আগে সেটা দেখুন।’’
এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুকে দলের এক বৈঠকে এসেছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিঘার জগন্নাথ মন্দির প্রসঙ্গে মুখ খোলেন দিলীপ। তাঁর মতে, সরকারি উদ্যোগে মন্দির তৈরি আমাদের পরম্পরা নয়। অতীত মনে করিয়ে দিলীপ জানান, স্বাধীনতার পরে যখন সোমনাথ মন্দির নির্মাণের কথা হল, সবাই গিয়েছিলেন গাঁধীজির কাছে। তখন প্যাটেলও বেঁচেছিলেন। গাঁধীজিও বলেছিলেন অবশ্যই মন্দির হওয়া উচিত। কিন্তু সরকারি টাকায় যেন মন্দির না হয়। সাধারণ মানুষের টাকায় মন্দির তৈরি করুন।সেটাই হয়েছিল। দিলীপ আরও বলেন, ‘‘রাম মন্দিরও সরকার গড়ে দেবে না। আমরা সেটাকে নৈতিক দিক থেকে সমর্থন করি।’’
দিলীপ আরও স্পষ্ট করে দেন, মন্দিরের জন্য জায়গার বন্দোবস্ত করা, সুরক্ষার ব্যবস্থা করা, তা যথাযথ ভাবে সঞ্চালনার দিকটি সরকার অবশ্যই দেখবে। পুরীর মন্দিরেও সরকার সহযোগিতা করে। কিন্তু মন্দির কোথায় হবে, কেমন ভাবে হবে, তা সাধারণ মানুষের উপরই ছেড়ে দেওয়া ভাল।
দিলীপের এ সব মন্তব্যে অবশ্য আমল দিতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘সরকারে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা এ বিষয়ে বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দিলীপবাবুর তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’