দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
নিজের সংসদ এলাকায় এসে তৃণমূল নেতাদের জেলের ভাত খাওয়ানোর হুঁশিয়ারি দিলেন দিলীপ ঘোষ।
শনিবার খড়্গপুর গ্রামীণের জফলায় নতুন কৃষি আইনের সমর্থনে এক সভায় এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ। সেখানে তিনি দাবি করেন, ‘‘পাঁচ-ছ’মাস পরে বিজেপির সরকার হবে। তখন এদের (তৃণমূল) সব হিসেব করা হবে। সব মেদিনীপুর জেলে পাঠাব। জেলের ভাত খেতে হবে। বাড়ির পাতলা চালের ভাত আর জুটবে না। ওদেরই লুঠ করা রেশনের চালের ভাত খাওয়াব।”
এ রাজ্যে তৃণমূল সিপিএমকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে দাবি করে দিলীপ বলেন, “তৃণমূল এখন সিপিএমের ঝাণ্ডা লাগাচ্ছে। স্যালাইন দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। এমনকি সিপিএমের পুরনো দলীয় কার্যালয় খুলে ঝাঁট দিয়ে চা খাওয়ার টাকা দিচ্ছে। এসবে লাভ হবে না। লোক যাঁদের ‘রিজেক্ট’ করেছে তাঁদের ‘প্রোজেক্ট’ করে লাভ হবে না।” সিপিএমের থেকেও তৃণমূলের আমলে রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। দাবি করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে তাঁদের কর্মীদের মারা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ১২০ জন কর্মীকে খুন করেছে। সিপিএমের থেকেও তোমরা বড় খুনি।” ধানের নায্য মূল্য নিয়েও রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘চাষ তো ভাল হয়েছে। ধান কী বিক্রি করতে পারব? ধানের কী নায্য মূল্য পাব? কোথায় যায় টাকা?” কেন্দ্র ও রাজ্যে দুই জায়গাতেই বিজেপি সরকার থাকলে মানুষ কীভাবে সুবিধা পাবে এ দিন তা-ও বুঝিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর শহরে এসে রামনবমী উৎসব সমিতির বিজয়া সম্মিলনীতেও যোগ দেন তিনি। সেখানে বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ প্রমুখ ছিলেন। পরে এক প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সংগঠনের শক্তি, আদর্শ, কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে, আমাদের কর্মীদের লড়াইয়ের মাধ্যমে জিতেছি। আগামী দিনেও জিতব। বাংলায় পরিবর্তন করব।’’
শনিবার কেশিয়াড়ি ও নারায়ণগড়েও যান তিনি। কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে একটি পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করেন। বেগমপুরে দলীয় কার্যালয়ও উদ্বোধন করেছেন এ দিন। করোনা বিধি মেনে বাইরে বেরোনোর বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘এখনও ব্যাপক সংক্রমণ হচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে গেলে মাস্ক লাগিয়ে যাবেন।’’ যদিও এ দিন তাঁর প্রতিটি কর্মসূচিতেই বেশিরভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। দলের কেশিয়াড়ি উত্তর মণ্ডলের একটি কর্মসূচিতেও যোগ দেন দিলীপ। পাঁচিয়াড় বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই সভায় কংগ্রেস নেতা বিজয়কুমার ঘোষ বিজেপিতে যোগ দেন। ওই কর্মসূচিতে রাজ্যের রেশন ব্যবস্থা পরিচালনা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। দাবি করেন, ‘‘গত একবছর ধরে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মাথা পিছু পাঁচ কেজি করে চাল পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমাদের দিদিমণি সবটা দেন না। অর্ধেকটা রেখে দেন বাড়িতে।’’