নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দাপট চেহারা পাল্টে দিয়েছে দিঘার। রবি থেকে সোমবার, টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে দিঘার সমুদ্র। এমনিতে করোনা বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে উপকূল শহরে। কিন্তু তার মধ্যেই সোমবার রয়েছে পূর্ণিমার ভরা কোটাল। পাশাপাশি দু’দিনের বিপুল বৃষ্টি। সব মিলিয়ে উত্তাল সমুদ্র। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে সমুদ্র স্নানে নামার সময় পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নুলিয়ারাও সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। জোয়ারের সময় সমুদ্রের জল থেকে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আতঙ্ক তৈরি করেছে কেলেঘাই নদীর জলস্তর। ইতিমধ্যে একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়ার খবর রয়েছে। এর ফলে পটাশপুর, ভগবানপুর, এগরার বিস্তীর্ণ এলাকায় হু হু করে জল ঢুকছে। লক্ষাধিক মানুষ ইতিমধ্যেই ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় এবং আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত অমাবস্যার কোটালেও একই ভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল দিঘার সমুদ্র। সেই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করে তুলেছিল। এ বার পূর্ণিমার কোটালেও একই ভাবে আবহাওয়া খুবই খারাপ। রবিবার গভীর রাত থেকে জোরদার বৃষ্টি চলছে দিঘা-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই। এরই মাঝে রামনগরের বাধিয়া, জামোড়া প্রভৃতি জায়গার কিছু এলাকায় জল ঢুকেছে বলে খবর। তবে সমুদ্র বাঁধ এখনও অক্ষত রয়েছে বলেই স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রয়েছে, জানিয়েছেন রামনগর ১ ব্লকের সভাপতি শম্পা মহাপাত্র।
অন্য দিকে, টানা বৃষ্টির জেরে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে কেলেঘাই নদী। এই নদীর জলে ইতিমধ্যে চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পটাশপুর ১ ও ২, এগরা ১ ও ২ এবং ভগবানপুর ১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। কেলেঘাইয়ের বাঁধ একাধিক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় একাধিক ব্লক ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন বলেও খবর। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পটাশপুর ২ ব্লক থেকে প্রায় ১৫ হাজার জলবন্দি বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে। এলাকার মাটির বাড়ি বা এক তলা বাড়ি থেকে সমস্ত মানুষকেই সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও, সরকারী ভাবে ত্রাণ শিবির চালানো হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য বলেই দাবি করেছেন এলাকাবাসীরা।
শেষ কয়েক দিনের বৃষ্টির দাপটে মানুষ আগেই বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় ত্রিপল খাটিয়ে অস্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে রবিবার রাত থেকে ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মানুষের আতঙ্ক আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দু’এক দিনের মধ্যেই ভগবানপুর, চণ্ডীপুর বিধানসভার আরও এলাকা প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।