Mamata Banerjee

বিক্ষোভের ভয়ে সমস্যা এড়াচ্ছেন ‘দিদির দূত’রা!

সমস্যা দেখতে গিয়ে সমস্যা রয়েছে এমন স্কুল ও গ্রামের দিকে পা বাড়াচ্ছেন না ‘দিদির দূত’রা। পরিণামে  ছাদহীন স্কুল ও পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে আজ পর্যন্ত সমস্যায় ধুঁকছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৯
Share:

চিন্তিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

এলাকায় মানুষের অভাব অভিযোগ এবং সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহ একাধিক বিষয় দেখতে তৃণমূল 'দিদির দূত' কর্মসূচি শুরু করেছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, শুরুতেই রাজ্য জুড়ে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা জনগণের বিক্ষোভের মুখে পড়ায় বেকায়দায় পড়েছে তৃণমূল।

Advertisement

সমস্যা দেখতে গিয়ে সমস্যা রয়েছে এমন স্কুল ও গ্রামের দিকে পা বাড়াচ্ছেন না ‘দিদির দূত’রা। পরিণামে ছাদহীন স্কুল ও পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে আজ পর্যন্ত সমস্যায় ধুঁকছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের জেরে ‘দিদির দূত’রা আজকাল পাড়া ও মহল্লায় মন্ত্রী-পারিষদদের নিয়ে ঢুকছেন। শুনছেন মানুষের অভাব-অভিযোগ। কোথাও সাজানো গোছানো স্কুলের মধ্যে বিধায়ক ও তৃণমূলের নেতারা দিদির দূত হয়ে স্কুলের স্টাফরুমে আলোকিত করছেন এমন দৃশ্যও চোখে পড়ছে। এলাকায় জনসংযোগ শেষে দলীয় কর্মীর বাড়ির দালানে বসে মধ্যাহ্ন ভোজন সারছেন। পুরো বিষয়টি যেন একটি উৎসবের চেহারা নিয়েছে। যদিও এতে সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের কোনও কাজ হচ্ছে না বলে দাবি বিজেপি-সহ বিরোধীদের।

Advertisement

এগরা মহকুমায় তিনটি থানায় তৃণমূলের তারকা বিধায়ক-সহ জেলা সভাধিপতি ও বিধায়কেরা এযাবৎ শতাধিক ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি সেরেছেন। জানুয়ারিতে পটাশপুরের কাজিপাটনায় বেহাল রাস্তার জন্য বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল মেদিনীপুরের তারকা বিধায়ক জুন মালিয়াকে। ভগবানপুরে চড়াবাড়ে কংক্রিটের সেতুর দাবিতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ‘দিদির দূত’দের। দিকে দিকে বিক্ষোভের আঁচ টের পেতে তৃণমূল কর্মসূচির ধরন বদলেছে দাবি বিরোধীদের। যার ফলে এখন খুব বেশি সমস্যা জর্জরিত গ্রামে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে পা বাড়াতে চাইছেন না ‘দিদির দূত’রা। আগে থেকে বুথ স্তরের কর্মীদের সবুজ সঙ্কেত পেলেই এলাকায় ঢুকছেন তাঁরা।

চার বছর আগে ঘূর্ণিঝড়ে এগরার খোদকুল প্রাথমিক স্কুলের অ্যাসবেসটস্টসের ছাউনি উড়ে গেলেও ‘দিদির দূত’দের এখনও স্কুলে দেখা যায়নি বলে দাবি বিরোধীদের। পটাশপুরে সরিদাসপুর শিশুশিক্ষা স্কুল ছাত্রের অভাবে ধুঁকলেও সেখানে দেখা নেই দূতদের। আবার মঞ্জুশ্রীতে ভাঙা ছাউনিতে ত্রিপল চাপিয়ে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। পটাশপুরে তালিডিহাতে অস্বাস্থ্যকর জীর্ন ক্লাব ঘরে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে।স্থানীয়দের চাপে বিডিও স্কুলে সেই কেন্দ্র স্থানান্তরিত করেছে। এভাবেই এগরা মহকুমায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্বাস্থ্যকর ও সমস্যায় জর্জরিত হলেও সে দিকে বিক্ষোভের ভয়ে পা বাড়াচ্ছেন না ‘দিদির দূত’রা। এমনটাই দাবি বিরোধীদের।

যদিও বিজেপির অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। পাল্টা বিজেপিকে মিথ্যাচারী ও গরিব শোষণকারী বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। কাঁথি সাংগঠনিক বিজেপির জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘দিদির দূতেরা প্রথম দিকে জনগনের তাড়া খেয়ে এখন নিজেদের চরিত্র বদলেছে। বিক্ষোভের ভয়ে সমস্যা জর্জরিত স্কুল ও এলাকায় যাচ্ছে না। বিক্ষোভের ভয়ে এখন একসঙ্গে অনেক নেতা-কর্মীরা জোটবদ্ধ হয়ে ঘুরে ছবি তুলে ফিরে আসছেন।’’

কাঁথি সাংগঠনিক তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল মানুষের কাজে চব্বিশ ঘণ্টা থাকে। কাজ হয়েছে বলে এই সরকারের প্রতি মানুষের আশা আরও বেড়েছে। ভয়ে পেয়ে সমস্যাসঙ্কুল এলাকায় না যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বিজেপির কাজ শুধু মিথ্যাচার করা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement