রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ।
মাওবাদী প্রভাবিত জেলাগুলোকে নিয়ে বৈঠক হল মেদিনীপুরে। সেই সূত্রে ভারতী ঘোষের জমানা শেষে বুধবারই প্রথম মেদিনীপুরে এলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। ফলে, সকলেরই নজর ছিল ভারতী-পর্ব শেষে বিশেষ কোনও বার্তা দেন কিনা ডিজি। গোটা বৈঠকে, এমনকী সাংবাদিক বৈঠকেও ভারতী-প্রসঙ্গ অবশ্য উহ্যই থাকল। যা দেখে জেলা পুলিশের একাংশ মনে করছেন, এতে স্পষ্ট ভারতী-জমানা এখন অতীত।
বুধবারের বৈঠকে পূর্বতন পুলিশ সুপারের কোনও প্রসঙ্গই ওঠেনি? জেলা পুলিশের এক কর্তার জবাব, “অতীত নিয়ে আলোচনা না
হওয়াটাই স্বাভাবিক!”
ভারতী সরায় জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এমন আশঙ্কাও ছিল পুলিশের একাংশে। তা যে অমূলক এ দিন তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ডিজি-কে বলতে শোনা যায়, “আইনশৃঙ্খলা থেকে বিভিন্ন দিকের পর্যালোচনা হয়েছে। সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
বুধবার মেদিনীপুরে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলোর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন ডিজি। মেদিনীপুর পুলিশ লাইনের সেফ হাউসে এই বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের পুলিশ কর্তারা হাজির ছিলেন। মেদিনীপুরের এই বৈঠক নিয়ে অবশ্য বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি ডিজি। তিনি শুধু বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোকে নিয়ে বৈঠক হল। এলডব্লুই এলাকা (মাওবাদী অধ্যুষিত) নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নানা জিনিস আলোচনা হয়েছে। সিআরপি-র অফিসারেরাও ছিলেন এটা প্রশাসনিক রুটিন বৈঠক।” তাঁর সংযোজন, “সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে। বিভিন্ন রকম অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলার দিকটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অপরাধ সংক্রান্ত দিক নিয়েও আলোচনা হয়েছে।” বৈঠকে ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল), ডিআইজি (মেদিনীপুর)। বৈঠকে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়েও আলোচনা হয়। ডিজি বলেন, “এই প্রচার কর্মসূচিতে খুব ভাল ফল পেয়েছি। প্রায় ১৫ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে। ইতিমধ্যে জেলাগুলোকে বিভিন্ন রকম ট্রাফিক-পরিকাঠামো দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।”
পুলিশের এক সূত্রে খবর, মাওবাদী প্রভাবিত জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে এলাকার পরিস্থিতি জানতে চান ডিজি। সব জেলাকেই আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ডিজি। জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “ডিজি আরও সতর্ক থাকতে, কড়া হাতে অপরাধ দমন করতে বলেছেন।”
রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর শীর্ষ মাওবাদী নেতার কিষেণজির মৃত্যু হয়। এরপর থেকে জঙ্গলমহলে মাওবাদী-নাশকতার কোনও ঘটনা ঘটেনি। এ দিন বৈঠক শেষে ডিজি বলেন, “ঝাড়খণ্ড এবং ওডিশার সঙ্গে নির্দিষ্ট সময় অন্তর যৌথ অভিযান হয়। সমন্বয় আলোচনা হয়।” পুলিশের দাবি, সীমানাবর্তী এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা রয়েছে। ফলে, চিন্তার কিছু নেই।