প্রতীকী ছবি।
কখনও পঞ্চায়েত নির্বাচন, কখনও প্রধানের নির্বাচন তো কখনও লোকসভা ভোট—গত দু’বছরে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে ময়নরা বাকচা পঞ্চায়েত। তাতে প্রভাব পড়েছে পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের কাজে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত দেড় বছরে বিভিন্ন খাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের তহবিলে খরচ না হয়ে পড়ে রয়েছে দু’কোটিরও বেশি টাকা।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে বাকচা পঞ্চায়েত দখল করে শাসকদল তৃণমূল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিজেপি-তৃণমূলের সমর্থকদের সংঘর্ষ অশান্ত হয়েছে এলাকা। রাজনৈতিক এই অস্থিরতার জেরে থমকে গিয়েছিল এলাকার রাস্তাঘাট, পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা উন্নয়নের মত নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তৃণমূলের প্রধান, উপ-প্রধান-সহ অধিকাংশ সদস্য থাকলেও প্রায় দেড়বছর ধরে অচলাবস্থা চলে গ্রামপঞ্চায়েতের স্বাভাবিক কাজে।
গত ১৪ অক্টোবর বাকচার তৃণমূল নেতা বসুদেব মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ ওঠে বিজেপি’র স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাকচার বিজেপি নেতা তথা ময়না দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি অলক বেরা-সহ ১৩ জন নেতা আপাতত পলাতক। আদালতের নির্দেশে গত ২৩ ডিসেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়েছে। আর ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপির ২০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সোমবার তমলুক আদালতে চার্জশিট জমা পড়েছে। এর পরে বাকচায় ফের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়েছেন। নজর দেওয়া হচ্ছে এলাকার উন্নয়েন কাজে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বাকচার পঞ্চায়েত প্রধান সুখলাল মণ্ডল-সহ দলের সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য, স্থানীয় নেতাদের নিয়ে গত সোমবারই বৈঠক করেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত মালাকার। ময়নায় দলীয় কার্যালয়ে হওয়া ওই বৈঠকে বাকচা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের রাস্তা পাকা করা, পানীয় জলের সাব-মার্সিবল পাম্প বসানো এবং নিকাশি ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন খালের উপরে কালভার্ট তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, তহবিলে থাকা দু’কোটিরও বেশি টাকা দিয়েই ওই সব কাজ হবে। ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘বাকচা পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নের কাজের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২ কোটি টাকা রয়েছে। ওই টাকা খরচ করে ২১ টি রাস্তা পাকা করা, পানীয় জলের ১৬ টি সাব মার্সিবল পাম্প বসানো এবং নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নের কাজ করা হবে।’’ পঞ্চায়েত প্রধান সুখলালের কথায়, ‘‘এই সপ্তাহ থেকেই ১০০ দিনের কাজগুলি শুরু হয়ে যাবে। অন্য কাজের জন্যও দ্রুত দরপত্র ডাকা হবে।’’