ফাঁকা মন্দারমণির সৈকত। নিজস্ব চিত্র।
পার হয়ে গিয়েছে একটা সপ্তাহ। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ১৪০টি হোটেল ভাঙার প্রশাসনিক নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। তবুও স্বস্তি ফিরছে না। সপ্তাহান্তের ছুটিতে এবারও ফাঁকা মন্দারমণি। এতেই মুখ ভার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
শনি এবং রবিবার সপ্তাহান্তের ছুটি থাকে। শীতের মরসুমে এই সপ্তাহান্তগুলিতে জমজমাট থাকে মন্দারমণি। কিন্তু ছন্দপতন ঘটতে শুরু করে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। সেই ধারা অব্যাহত চলতি সপ্তাহের শেষেও। এদিন সব হোটেলে অধিকাংশ রুম ফাঁকা ছিল মন্দারমণিতে। দাদনপাত্রবাড় থেকে মন্দারমণি পর্যন্ত সৈকতও ছিল পর্যটক শূন্য। বিশ্ব বাংলা পার্কের ধারে শৌখিন জিনিসের দোকান রয়েছে স্থানীয় যুবক দীপক প্রধানের। তিনি বলছেন, ‘‘কোথায় লোক! এক সময় শনি ,রবিবার গমগম করত। কিন্তু আজও মাছি তাড়ানোর পরিস্থিতি।’’ স্থানীয় আর এক দোকানদার অশোক পান্ডা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম এই সপ্তাহ থেকে হয়তো বিক্রি বাট্টা হবে। কিন্তু সারাদিন ধরে পর্যটকদের গাড়ি কার্যত এই রাস্তা দিয়ে ঢোকেনি।’’
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে মন্দারমণির ১৪৪টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে যান হোটেল মালিকরা। আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোটেল ভাঙার নির্দেশের উপরে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এরই মধ্যে নবান্নে গিয়ে মুখ্য সচিব মনোজ কুমার পন্থের সঙ্গে দেখা করে হোটেলগুলিকে বাঁচানোর আর্জি জানিয়েছেন সেখানকার হোটেল মালিকেরা। হোটেলে কোপ না পড়লেও ভিড় কেন হচ্ছে না, সে নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।
এ সপ্তাহে আবহাওয়া কিছুটা বিরূপ। তাছাড়া, বুধবার থেকে মন্দারমণির কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ একাধিক যৌন কর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন চক্রের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন। জোড়া কারণে পর্যটকদের কাছে মন্দারমণি সম্পর্কে খারাপ বার্তা পৌঁছচ্ছে বলে দাবি স্থানীয় দোকানদারদের।
পরপর দু সপ্তাহ ধরে সেরকম পর্যটক না হওয়ায় হতাশ বাড়েছে। এ কথা মানছেন মন্দারমণি হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি মমরেজ আলি। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা ভাঙার নির্দেশের পর থেকে হোটেল ব্যবসায়ীদের তো ক্ষতি হচ্ছেই। অনেকের ঝুঁকি এড়াতে হয়তো এখানে আসছেন না। তবে আমরা চাই পর্যটকেরা নির্দ্বিধায় মন্দারমণি বেড়াতে আসুন।’’