প্রতীকী ছবি।
পাঁশকুড়ার হাউর এলাকার আটাং, দশাং, আমদান প্রভৃতি গ্রামে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। সপ্তাহ দু’য়েক আগে পাঁশকুড়ার ওই সব গ্রামে জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পাঁশকুড়ার ওই সব গ্রামে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে তা তমলুক জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুরে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ২৬ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এর মধ্যে শুধু পাঁশকুড়া ব্লকেই আক্রান্তের সংখ্যা ৯। এ ছাড়াও নন্দকুমার সহ কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।
শুধু ডেঙ্গি নয়, ওই সব এলাকায় টাইফইয়েডে আক্রান্তের সন্ধানও পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। আর এখানেই বিভিন্ন এলাকায় জ্বরে আক্রান্তদের পরিবার বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্তের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ক্ষোভ জানিয়েছেন চিকিৎসার পরিকাঠোম নিয়েও।
তমলুক জেলা হাসপাতাল ছাড়াও পাঁশকুড়া, নন্দীগ্রাম ও এগরায় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। কিন্তু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের কারও ডেঙ্গি হয়েছে তা জানার জন্য একমাত্র উপায় তমলুক জেলা হাসপাতালের পরীক্ষাগার। এর ফলে জেলার বিভিন্ন ব্লক, মহকুমায় জ্বরে আক্রান্ত কিংবা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের নমুনা পাঠাতে হচ্ছে তমলুক জেলা হাসপাতালের পরীক্ষাগারে। সারা জেলা থেকে প্রচুর সংখ্যক রোগীর রক্তের নমুনা আসায় ডেঙ্গি নির্ণয় করে রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় লাগছে বলে রোগীদের পরিবারের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, দেরিতে রিপোর্ট আসায় চিকিৎসার ক্ষেত্রেও দেরি হচ্ছে। এই সমস্যা মেটাতে অনেকেই ব্লক, মহকুমা এবং সুপার স্পেশলিটি হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয় ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, একাধিক হাসপাতালে এই ব্যবস্থা থাকলে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে।
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানান, জ্বরে আক্রান্ত কারও ডেঙ্গি হয়েছে কিনা জানার জন্য রক্তের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা একমাত্র তমলুক জেলা হাসাপাতালে রয়েছে।
কেন অন্য হাসপাতালগুলিতে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে না?
নিতাইবাবু বলেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষার এই যন্ত্র খুব দামি। তবে জেলায় এই যন্ত্র একটি হলেও রক্তের নমুনা আসার পর এক দিনের মধ্যেই রিপোর্ট অনলাইনে জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে দ্রুত তা চিহ্নিত করতে অসুবিধা হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জেলা হাসপাতাল ছাড়া অন্য হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসায় পরিকাঠামোর অভাবের অভিযোগ ঠিক নয়।’’