গ্রেফতার হয়েছেন বউমা। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলে-বউমার ঝগড়া থামাতে গিয়ে প্রাণান্তকর পরিস্থিতির মুখে পড়লেন প্রৌঢ় শ্বশুর। রাগের বশে বৃদ্ধের অণ্ডকোষ ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল বউমার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার নারকেলদহ গ্রামে। অভিযুক্ত বধূর নাম শিখা হাইত। ২৭ বছরের তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শিখা চেয়েছিলেন পুজোর আগে বাপের বাড়ি যেতে। জানান, বাপের বাড়িতে মাংস রান্না হবে, তাই যাবেন। কিন্তু স্ত্রীকে বাপের বাড়ি যেতে বাধা দেন স্বামী বিশ্বজিৎ। পরিবর্তে তিনি বাড়িতে মাংস আনেন। তাতে ঝামেলা আরও বাড়ে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। সে সময়ই ছেলে-বউমার ঝগড়া থামাতে যান বছর ৭৫-এর বৃদ্ধ শ্বশুর। অভিযোগ, রাগের মাথায় শ্বশুরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন শিখা। এর পর তাঁর অণ্ডকোষ টেনে ছিঁড়ে ফেলেন শিখা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বৃদ্ধ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বিশ্বজিতের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ময়না থানার পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। কিন্তু আচমকা কেন এমন হিংস্র হয়ে উঠলেন গৃহবধূ, কেনই বা তিনি এমন কাণ্ড ঘটালেন?
এ নিয়ে তমলুকের প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ আলোক পাত্র বলেন, ‘‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমাজের একটা বড় অংশের মানুষ অল্পেতেই প্রচণ্ড হিংস্র হয়ে যান। এর অন্তর্নিহিত কারণ লুকিয়ে আছে সমাজের প্রাত্যহিক জীবনের প্রেক্ষাপটে। ছোট পরিবার, একা থাকার অভ্যাস, সমাজমাধ্যমে এক টানা ডুবে থাকা ইত্যাদি এ জন্য দায়ী।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই তরুণী যে ভাবে শ্বশুরের অণ্ডকোষ ছিঁড়ে ফেলেছেন, তা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। কী কারণে মহিলা শ্বশুরের গোপনাঙ্গে হামলা চালালেন সে দিকটিও বিশেষ ভাবে দেখা জরুরি। রাগের মাথায় অন্য জায়গায় তো হামলা করা যেত। যদি দুর্ঘটনাজনিত কারণে এমনটা ঘটে থাকে তা হলে সেটা সাময়িক রাগের বহিঃপ্রকাশ। আর যদি মহিলা জেনেবুঝেই এই হামলা করেন, তাহলে এর পিছনে শারীরিক সম্পর্কের টানাপড়েনের বিষয়টিও লুকিয়ে থাকতে পারে।’’