বিপজ্জনক: এখানেই হয় মরণকুঁয়ার খেলা। —নিজস্ব চিত্র।
নিরাপত্তার কারণে নিষেধ রয়েছে। তারপরেও পুলিশ-প্রশাসনের চোখের সামনেই বিভিন্ন মেলায় চলছে মরণকুঁয়ার মতো বিপজ্জনক খেলা।
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং—দুই জোলার সীমানা লাগোয়া এলাকায় মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বসেছে তুলসীচারা মেলা। মেলা লাগোয়া এলাকায় রমরম করে চলছে মরণকুঁয়া। বেআইনি এই খেলা বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে মেলা কমিটি। কিন্তু তারপরেও ওই খেলা চলছে বলে অভিযোগ।
সবংয়ের দশগ্রামে তুলসীচারার মেলায় মরণকুঁয়া খেলা নিয়ে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে মেলা কমিটি। মেলা কমিটির দাবি, স্থানীয় এক বাসিন্দার ব্যক্তিগত জমিতে ওই খেলা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের খেলার জন্য প্রশাসনের অনুমতি লাগে। বিপদের কারণে ইতিমধ্যেই পাশের জেলা হাওড়া-হুগলিতে এই খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। কুড়ি ফুট উঁচু লোহার এবং কাঠের অস্থায়ী পাটাতনের বৃত্তের মধ্যে মোটর সাইকেল এবং চারচাকার গাড়ি নিয়ে রোমহর্ষক এই খেলা দেখানো হয়। টিকিট কেটে মাটি থেকে কুড়ি থেকে পঁচিশ ফুট উচ্চতায় লোহার কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে এই খেলা দেখেন দর্শকেরা। কূপের ভিতরে যখন বাইক-গাড়ির দৌড় চলতে থাকে তখন কাঁপতে থাকে গোটা মঞ্চ। যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সবংয়ের বিডিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা তথা মেলা কমিটির সদস্য সুজয়রঞ্জন দাস বলেন, “বৃহস্পতিবারও মরণকুঁয়া রমরমিয়ে চলেছে। আমরা লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা ফের বিডিওকে জানিয়েছি।” ঘটনার পিছনে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের মদত রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “এ বার এই খেলা বসানো নিয়ে অনেক গোলমাল হয়। তার পরেও পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূলের নেতাদের প্রশ্রয়ে এমন বিপজ্জনক খেলা চলছে।”
মেলা কমিটির সম্পাদক রামকৃষ্ণ পাল বলেন, “আমরা এই খেলা যাতে না বসে তার জন্য পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তারপরেও ব্যক্তিগত জমিতে মরণকুঁয়া বসেছে। দুর্ঘটনা ঘটলে তো দায় আমাদের ঘাড়ে চাপবে। তাই বিডিওকে অভিযোগ জানিয়ে রেখেছি। কিন্তু তারপরেও প্রশাসনিক উদাসীনতায় চলছে এই বিপজ্জক খেলা।’’
এ ব্যাপারে দশগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিল সাঁতরা বলেন, “আমি মরণকুঁয়া খেলা বসাতে নিষেধ করেছিলাম। কেন তা মানা হয়নি খোঁজ নিয়ে দেখব।”