প্রতীকী ছবি
বিদ্যুৎ নেই। জল সঙ্কট তীব্র। করোনা পরিস্থিতিতে এতে আমজনতার পাশাপাশি চরম সমস্যায় পড়েছেন হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ নিয়ে শনিবার হাসপাতালের সুপারের কাছে তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
আমপান ঝড়ে বিপর্যস্ত হলদিয়া। হাজার হাজার বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা। তাতে জলের সরবরাহের কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। শহরের অন্য এলাকার মতো হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের যে আবাসন রয়েছেন, সেখানেও দেখা দিয়েছে জল কষ্ট। স্বাস্থ্য কর্মীদের বক্তব্য, করোনার সঙ্গে ময়দানে তাঁরা সরাসরি লড়ছেন। প্রতিদিন হাসপাতালে হাজারো রোগীর সেবা করেছেন। কিন্তু তাঁরা যাতে করোনা সংক্রমিত না হন, সে জন্য তাঁদের বারবার হাত ধুতে হচ্ছে। বাড়ি ফিরে ভাল করে স্নান করতে হচ্ছে। এখন জল যদি না পাওয়া যায়, তাহলে তাঁরা করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানবেন কী করে!
স্বাস্থ্য কর্মীরা জানাচ্ছেন, ওই আবাসনে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টি পরিবার থাকে। শনিবার তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আবাসনে যে জল রয়েছে, তা আজ, রবিবার সকালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তা হলে আজ, রবিবার থেকে তাঁদের কী হবে! হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে যাঁরা ডিউটি করছেন, তাঁরা বাড়ি ফিরে জল ছাড়া নিজেদের কীভাবে জীবাণুমুক্ত করবেন— এই চিন্তা এখন বাসা বেঁধেছে স্বাস্থ্যকর্মীদের মনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘আইসোলেশন ওয়ার্ডের ডিউটি করছি। যদি কোনও ভাবে এই ভাইরাস বাড়িতে চলে আসে, তাহলে তো পরিবারের মধ্যেও সংক্রমণ চড়াবে। জল না থাকলে স্নান করব-হাত ধোব কীভাবে!’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিপর্যস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা এদিন হাসপাতাল সুপারের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, গেঁওখালি থেকে হলদিয়া শহরে জলের জোগান দেওয়া হয়। সেই পাম্পটি বিদ্যুৎ এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কাজ করছে না। ফলে গেঁওখালি থেকে হলদিয়ায় পানীয় জলের যোগান দেওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সিইও হরিশঙ্কর পার্রীকর বলেন, ‘‘বিদ্যুতের অভাবে জল শোধন করার কাজ করা যাচ্ছে না। যা মজুত ছিল, তা দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ খুব তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জল শোধনাগার কারখানায় বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’
জলের যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনই শহরের বাসিন্দা এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েও বিপাকে পড়েছেন। বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যহত হওয়ায় এটিএমগুলিতে লিঙ্ক থাকছে না। এ ব্যাপারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যঙ্কের চ্যানেল ম্যানেজার শুভেন্দু সান্যাল বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ এলেই সমস্যার সমাধান হবে।’’