ধরাশায়ী: আমপানে গাছ ভাঙে মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বরে। ফাইল চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রচুর গাছ তছনছ হয়েছে। সংখ্যাটা প্রায় ৩১ হাজার। এ বার গাছ লাগানোয়বাড়তি গুরুত্ব না দিলে সবুজায়নে এ জেলার পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা পরিবেশপ্রেমীদের। আজ, শুক্রবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে অবশ্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ লাগানোর কর্মসূচি হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রণব বিশ্বাসের আশ্বাস, ‘‘এ বছর গাছ লাগানোয় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’
ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে জেলার বেশ কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু এলাকা কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। সব এলাকাতেই কমবেশি গাছ উপড়েছে। ঠিক কত সংখ্যক গাছ তছনছ হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে? বন দফতরের এক সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ৩১,৩০১টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় বন দফতরের তিনটি বিভাগ— মেদিনীপুর, খড়্গপুর এবং রূপনারায়ণ। এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ গাছই ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি প্রভৃতি।’’ ওই বন আধিকারিক বলছেন, ‘‘যে সব গাছের শিকড় মাটির গভীরে ছিল, সেগুলির সবও নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। আসলে আমপানের মতো ঝড় সামলানো অনেক ধরনের গাছের পক্ষেই সম্ভব হয়নি।’’
পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, নদীর ধারে গাছের যে ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত পূরণ করতে না পারলে আগামী দিনে ভাঙন, ভূমিক্ষয় বাড়তে পারে। নদী তীরবর্তী এলাকায় মাটির ক্ষয়রোধেও বনসৃজনের আশু প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ জীব বৈচিত্র্য পর্ষদের পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার কো-অর্ডিনেটর দেবজ্যোতি নন্দ বলছিলেন, ‘‘ সাময়িক ক্ষতিমেনে নিয়েই গাছরক্ষা ও বনসৃজনে উপযুক্ত পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। না হলে পরিবেশ দূষণ বাড়তে পারে।’’
ঘূর্ণিঝড়ে জেলার কিছু নার্সারিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে কয়েক হাজার চারা। সব দিক দেখে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে প্রশাসন। জেলার বন কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহের আশ্বাস, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পেও গাছ লাগানো হচ্ছে। পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে চারা লাগানোর পরিকল্পনা হচ্ছে।’’ পঞ্চায়েতগুলিকে চারা রোপণের জায়গা ঠিক করতেও বলা হয়েছে।