প্রতীকী ছবি
ফের আমপান ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।
ক্ষতি হয়নি অথচ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এমন উপভোক্তাদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করলেন কাঁথির মহকুমাশাসক। অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘হোল্ড’ও করা হয়েছে। অন্যদিকে নন্দীগ্রামে ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে টাকা না ঢোকার কারণ জানতে গিয়ে ধরা পড়েছে, প্রকৃত প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের বদলে সেখানে রয়েছে অন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর।
দীর্ঘ চার মাস বাদে আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে এমন দুর্নীতির ঘটনায় জেলায় ফের শাসক দলের বিরুদ্ধে সবর হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।পাশাপাশি আমপান দুর্নীতিতে মহকুমাশাসকের এমন পদক্ষেপ জেলায় প্রথম।
গত ২০মে আমপানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল জেলায়। কাঁথি শহরের ২১টি ওয়ার্ডে অনেকে আমপানের ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন। পরে ১০০ জন ভুয়ো প্রাপকের নামে জেলাশাসকের অফিসে অভিযোগ জমা পড়ে। তার ভিত্তিতে জেলাশাসক মহকুমাশাসককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছিলেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সেইমতো বেশ কয়েকজনকে একাধিকবার সরকারি অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হলেও তাতে সাড়া মিলছিল না।
দিন কয়েক আগে জেলার চারজন মহকুমা শাসক এবং ২৫ জন বিডিও কে নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে মিটিংয়ে এ ব্যাপারে জেলাশাসক সতর্ক করে দেন। গত ১৬ সেপটেম্বর কাঁথি শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার আগে অগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় আরও দুটি এফআইআর দায়ের করেন মহকুমা শাসক। তাতে কয়েকজন ক্ষতিপূরণ প্রাপকের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মহকুমা শাসকের দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এরকম ২০ জন উপভোক্তার ব্যাঙ্ক আকাউন্ট ‘হোল্ড’ করে রাখা হয়েছে।
মহকুমা শাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কাঁথি পুর এলাকায় ক্ষতিপূরণ প্রাপকের তালিকা আমরা চূড়ান্ত করেছিলাম। তাই একই ব্যক্তি একাধিকবার অর্থ পেয়েছেন বা একই পরিবার একাধিকবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, এমন লোকেদের প্রথমে নোটিস পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়। একাধিকবার নোটিস পেয়েও যাঁরা সরকারি অর্থ ফেরত দেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।’’ অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে কাঁথি থানার পুলিশ জানিয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম জ্বলজ্বল করলেও তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি কেন জানতে গিয়েছিলেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আকন্দবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিজয় কুমার সাহু। জানতে পারেন তাঁর আবেদনে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর রয়েছে তা তাঁর নয়। বিজয়ের দাবি, গত ২ সেপ্টেম্বর এবং তার আগেও তিন তিন বার তিনি বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও প্রশাসনের টনক নড়েনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হওয়াতেই ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন শাসক দলের নেতা-সহ সরকারি আধিকারিকরা।’’
দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সামসুল ইসলাম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে এমন অভিযোগ জমা পড়লে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’’ বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’