প্রতীকী ছবি।
পাঁশকুড়া: বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের ঘা, লকডাউনের ধাক্কা সামলে ওঠা যায়নি। এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘আমপানে’ কোমর ভেঙে দিল জেলার চাষিদের। ঝড় এবং প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে জেলার আনাজ, তিল, বাদাম, পান ও ফুল চাষিরা। কৃষি দফতরে জমা পড়া প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে, ‘আমপানে’র জেরে ওই পাঁচ ধরনের চাষে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন কৃষি আধিকারিকদের।
গত বছর ৯ এবং ১০ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরে তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। সেবার সব ধরনের ফসলের পাশাপাশি, চরম ক্ষতির মুখে পড়ে আমন ধানের চাষ। জেলার অধিকাংশ মৌজাকেই ক্ষতিগ্রস্ত বলে ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। সেই মতো কৃষকদের দেওয়া হয় ক্ষতিপূরণ। সেই ঝড়ের ধাক্কা সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার আগেই করোনা পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন। এতেও চাষবাসের কাজে বাধা হয়েছে। এর পরে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে ‘আমপান’। বোরো ধান চাষে তেমন ক্ষতি না হলেও পান, ফুল, তিল, বাদাম ও আনাজের ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি দফতর ক্ষয়ক্ষতির যে প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করেছে, তা ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নবান্নে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে, তিন হাজার ২০০ হেক্টর পান, ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর বাদাম, এক হাজার ৯৮০ হেক্টর তিল, চার হাজার ৯২০ হেক্টর আনাজ এবং এক হাজার ৫০ হেক্টর ফুল চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অঙ্কে ওই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, প্রাক্ ‘আমপান’ সময়ে জেলা জুড়ে কালবৈশাখী এবং নিম্নচাপের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলেছিলই। সেই সময় বোরো চাষে যে ক্ষতি হয়েছিল, তার পরিমাণ প্রায় ৫৪৫ কোটি টাকা। সেই রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে নবান্নে।
বুলবুলে’র জেরে জেলার তিন হাজার ১২টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। প্রায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। আমপানে বুলবুলের থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। এবারও কি মিলবে ক্ষতিপূরণ? এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর আশিস বেরা বলেন, ‘‘আমরা কৃষিক্ষেত্রের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। এখনও বেশ কিছু জায়গা থেকে রিপোর্ট আসা বাকি। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা চূড়ান্ত রিপোর্ট বানাব। সরকার যেমন ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করবে, সেই মতো দেওয়া হবে।’’