পথে সিআরপি জওয়ানেরা। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
শত্রু নিধনে যাঁরা প্রতিদিন হাতে তুলে নেন বন্দুক, তাঁরাই এলাকার মানুষকে সচেতন করতে সাইকেল নিয়ে চষে বেড়ালেন গোয়ালতোড়ের অলিগলি। বুধবার সকাল থেকে বিকেল উর্দিধারী সিআরপি জওয়ানদের মানবিক চেহারা দেখল গোয়ালতোড়ের বাসিন্দারা। অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝাতে সাইকেল চালিয়ে সচেতনতা প্রচার সারলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।
গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোলে সিআরপির ৬৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের একটি ক্যাম্প রয়েছে। মাওবাদী-পর্ব থেকেই তাঁরা এখানে রয়েছেন। জঙ্গলমহল বলে পরিচিত গোয়ালতোড়ের বিভিন্ন এলাকায় রুটিনমাফিক টহল ছাড়াও লালগড়, সারেঙ্গা সীমানার জঙ্গলে নিয়মিত তল্লাশি চালান সিআরপিএফের জওয়ানেরা। দীর্ঘদিন থাকার ফলে এলাকার মানুষের সাথে তাঁদের সখ্যতাও গড়ে উঠেছে। গ্রামের মানুষের সাহায্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা আগেও এগিয়ে এসেছেন। মানুষকে সচেতনও করেছেন। করোনা কালেই তাঁরা দল বেঁধে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মাস্ক-স্যানিটাইজার বিলি করে, তার ব্যবহার কতটা জরুরি বুঝিয়ে এসেছেন। এ বার গ্রামের মানুষকে তাঁরা বোঝালেন অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তার কথা।
বুধবার সকালে কেওয়াকোল ক্যাম্প থেকে ১০ জন সিআরপি জওয়ান সাইকেলে ‘অর্গ্যান ডোনেশন’-এর বোর্ড ঝুলিয়ে পথে নামেন। সিআরপিএফের ৬৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট অজয়কুমার সিংহের নির্দেশে, ডেপুটি কমান্ডান্ট গৌতমকুমার মিত্রের পরিচালনায় এ দিন শুরু হয় অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতার প্রচার। সাইকেল চালিয়ে জওয়ানেরা গোয়ালতোড়ের কোলে মোড় বাসস্ট্যান্ড, থানা মোড়, বাজার এলাকা ছাড়াও কিয়ামাচা, পিংবনি, কাদোশোলের মতো গ্রাম এলাকাতেও প্রচার চালান। গ্রামের গলিতে সাইকেল চালিয়ে জওয়ানেরা গ্রামের মানুষকে বোঝান রক্তদানের মতো এখন অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তার কথা। দোকান, বাজারে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে গিয়েও একই কথা বলেন তাঁরা।
এমন উদ্যোগে কতটা সাড়া পেলেন? নিজে সাইকেল চালিয়ে সচেতনতার প্রচারে অংশ নেওয়া ডেপুটি কমান্ডান্ট গৌতমকুমার মিত্র বলেন, ‘‘এর আগে ব্যানার টাঙিয়ে, পদযাত্রা করে গ্রামের মানুষকে নানা বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। এ বার সাইকেলে এলাকা ঘুরে অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মানুষকে বোঝানো হল। গ্রামের মানুষ আগ্রহ ভরে শুনলেন। বুঝতে না পেরে অনেকে প্রশ্ন করে জেনেও নিলেন অনেক কথা।’’ জওয়ানদের সচেতনতার এই প্রচার চলবে বলে জানাচ্ছেন সিআরপির এই আধিকারিক।