টাকা তুলতে তৃণমূলের ঘরেও যাবে সিপিএম

দুর্দিনে অর্থই বড় সঙ্কট। এমনকী সিপিএমেরও! ক্ষমতা গিয়েছে পাঁচ বছর আগে। এ বারের বিধানসভা ভোটে অবস্থা আরও কোণঠাসা হয়েছে। এই অবস্থায় সিপিএম এখন চরম অর্থ সঙ্কটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৭:০৫
Share:

দুর্দিনে অর্থই বড় সঙ্কট। এমনকী সিপিএমেরও!

Advertisement

ক্ষমতা গিয়েছে পাঁচ বছর আগে। এ বারের বিধানসভা ভোটে অবস্থা আরও কোণঠাসা হয়েছে। এই অবস্থায় সিপিএম এখন চরম অর্থ সঙ্কটে। ভোটপর্বে আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য বিশেষ ত্রাণ তহবিল পর্যন্ত গড়তে হয়েছে। ওই তহবিলে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানিয়ে এলাকায় এলাকায় লিফলেট বিলি করছেন দলের কর্মীরা। এ ক্ষেত্রে জেলা নেতৃত্বের পরামর্শ, তৃণমূলের ‘ভাল লোকেদের’ কাছে যেতে হবে।

আজ, ১৯ জুন থেকে অর্থ সংগ্রহে পথে নামবে জেলা সিপিএম। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে শাসক দল সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। আক্রান্ত, অসহায় মানুষের পাশে থাকার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক, বিবেকবান মানুষকে এই তহবিলে যথাসাধ্য সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’’

Advertisement

দলীয় কর্মীরা কি তৃণমূলের লোকজনের কাছেও যাবে?

তরুণবাবুর জবাব, “কর্মীরা মানুষের কাছে যাবেন। তৃণমূলের সব লোক তো আর খারাপ নন!”

জেলা সিপিএমের এক সূত্রের দাবি, যে ভাবে দলের তহবিলে ‘চাপ’ পড়ছে, তাতে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা ছাড়া উপায় ছিল না। ইতিমধ্যে প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। যেহেতু একের পর এক দলের কার্যালয় বেদখল কিংবা ভাঙচুর হয়েছে, তাই ঘরছাড়া কর্মীদের সকলকে আশ্রয় দেওয়াও সম্ভব হয়নি। অগত্যা পরিচিতদের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সিপিএমের এক সূত্র মানছে, এখন দল ক্ষমতায় নেই। ফলে, বছরের নানা সময়ে যে অর্থ সংগ্রহ অভিযান হয়, তাতে সে ভাবে সাড়া মেলে না। আগে যাঁরা স্বেচ্ছায় অর্থ সাহায্য করতেন, এখন তাঁদের কাছে ‘সামান্য’ টাকা চাইলেও বেশিরভাগ সময়ই খালি হাতে ফিরতে হয়। সিপিএমের এক জেলা নেতার বক্তব্য, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আগের তুলনা। আরও অনেক বেশি আর্থিক দায়দায়িত্ব সমগ্র পার্টির উপর পড়ছে, পড়বেও। ফলে, জেলা পার্টির তহবিলে চাপ বাড়ছে।’’

জেলা সিপিএমের তহবিল মূলত পার্টির অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের উপর নির্ভরশীল। জেলা কমিটির সদস্য, জোনাল ও লোকাল কমিটির সম্পাদকগণ ও জেলা কমিটির প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীণ লোকাল কমিটি ও শাখা সদস্যদের লেভি ও বছরে এক বার একদিনের আয় জেলা তহবিলে জমা দিতে হয়। প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের ভাতা, পেনশন এই তহবিলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া, জোনাল কমিটি ও লোকাল কমিটির গণসংগ্রহের উপর জেলা কমিটি পার্টি সদস্য সংখ্যার অনুপাতে ধার্য কোটা ও জেলার প্রতিটি শাখার রাজ্য কমিটিকে দেয় ধার্য কোটা সংগ্রহ করে জমা দেয়। জোনাল ও লোকাল কমিটির হিসাব বছরে একবার, বিগত বছরের জমা-খরচের হিসাব ও আগামী বছরের বাজেট জেলা কেন্দ্রে জমা পড়ে।

তবে এই রিপোর্টগুলো জেলায় জমা পড়া ও আয়-ব্যয়ের হিসাবের সঙ্গে অন্য বিষয়ের (যেমন লেভি, গণসংগ্রহ) রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে দলেরই একাংশে। এমনকী, জেলা কেন্দ্র থেকে গণসংগ্রহের জন্য যে রসিদ-কুপন দেওয়া হয়, তার হিসাবও জেলা কেন্দ্রে নথিভুক্ত থাকে। কিন্তু জোনাল ও লোকাল কমিটিগুলো থেকে কাটা-আকাটা রসিদ, কুপন জেলায় ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্বলতা থেকে যায়। এ বার এই দুর্বলতা কাটানোর নির্দেশও দিয়েছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। দলের তরফে যে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে, সেখানে ই-মেলের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, সাহায্যের করার জন্য ই মেলে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সরাসরি জেলা কার্যালয়েও অর্থ সাহায্য পাঠানো যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement