নেতাই শহিদ বেদির পিছনে গোয়াল ঘরের বাম ও বিজেপির দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র।
গোয়ালঘরে কে?
একপাশে ‘ইনসাফ যাত্রা’। অন্যপাশে ‘ভোট ফর বিজেপি’।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের লালগড় লোকাল কমিটির সভাপতি অরবিন্দ দণ্ডপাট নেতাই গ্রামের বাসিন্দা। নেতাইয়ের বটতলা চকে শহিদ বেদির পাশেই অরবিন্দের বাড়ি। শহিদ বেদির ঠিক পিছনেই রয়েছে অরবিন্দের এক সম্পর্কিত জেঠুর গোয়ালঘর। সেই গোয়ালঘরের দরজার একদিকের বড় দেওয়ালে ডিওয়াইএফের ইনসাফ যাত্রা ও ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের দেওয়াল লিখন এখনও জ্বলজ্বল করছে। রবিবার ছিল নেতাই দিবস। সকাল থেকে কর্মসূচি ছিল নেতাই স্মৃতিরক্ষা কমিটির (বকলমে তৃণমূল)। বিকেলে আসরে নেমেছিল বিজেপি (বকলমে শুভেন্দু অধিকারী)। ইনসাফ যাত্রার শেষে রবিবারই ব্রিগেডে সমাবেশ ছিল ডিওয়াইএফের। তাদের দাবি, ওই সমাবেশে লালগড়ের নেতাই ও আশেপাশের এলাকা থেকে গিয়েছিলেন ২৬ জন।
সোমবার দুপুর। অরবিন্দের দেখা মিলল শহিদবেদির কাছেই। আদুল গায়ে কংসাবতী নদীতে স্নান করতে যাচ্ছিলেন। ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে অরবিন্দ বললেন, ‘‘মানুষ ধীরে ধীরে জাগছেন। সেই কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের বড় সাফল্য।’’ উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এক যুবকের কথায়, ‘‘নেতাইকে নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির রাজনীতি দেখে বিরক্তি ধরে গিয়েছে। স্বেচ্ছায় ব্রিগেডে গিয়েছিলাম।’’ ৪ ডিসেম্বর ডিওয়াইএফের জেলায় ইনসাফ যাত্রার সূচনা দিনে ভালই সাড়া মিলেছিল। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতাই গ্রামে পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। তবে নেতাই থেকে লালগড় পদযাত্রা করে পৌঁছেছিলেন মীনাক্ষীরা। ছিলেন নেতাই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত সিপিএম নেতা অনুজ পাণ্ডেও। যদিও ওই দিন সকালে শহিদ স্মৃতি রক্ষা কমিটি পোস্টার সাঁটিয়েছিল। ওই পোস্টারে লেখা ছিল ‘ধিক ধিক মীনাক্ষীদেবী রক্তমাখা দুষ্ট হাতে চাইছেন ইনসাফ’। তবে ওই রাতে লালগড়ের এসআই চকে মীনাক্ষীর পথসভায় ভাল লোকজন হয়েছিল। ২০১১ সালে এই নেতাই গ্রামে সিপিএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়িতে সিপিএমের শিবির থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি।