সরকারি বাস থামিয়ে রাস্তায় ক্রিকেট বাম ছাত্র-যুবদের। মেদিনীপুর শহরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
কোণঠাসা দশা কাটছে না কিছুতেই। গেরুয়া উত্থানে প্রধান বিরোধী তকমাও গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সাধারণ ধর্মঘটে সাতসকালেই অস্তিত্ব জানানে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের পথে নামলেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের হাতে আটকও হলেন শতাধিক।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলির ডাকে ৭ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট সর্বাত্মক বোঝাতে সকালেই মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় ক্রিকেট খেলেন বাম ছাত্র-যুবরা। কালেক্টরেট মোড়ে ব্যাট হাতে নেমে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিংহ বলেন, ‘‘রাস্তায় আমাদের ছাত্র-যুবরা ক্রিকেট খেলছেন, আমিও খেলছি।’’ কালেক্টরেট মোড়ে বিক্ষোভ দেখায় বামেরা। বিক্ষোভ, অবরোধ হয়েছে অন্যত্রও। শহরে মিছিল করে এসইউসি। তবে ধর্মঘটে বিশেষ প্রভাব পড়েনি মেদিনীপুরে। সকালের দিকে দোকানবাজার বন্ধ থাকলেও বেলায় খুলেছে। তবে বেসরকারি বাস কার্যত পথে নামেনি। সরকারি বাস আটকেছেন ধর্মঘটীরা। খড়্গপুরে সাপ্তাহিক ছুটিতে গোলবাজার বন্ধই ছিল। খরিদা, ইন্দায় বন্ধ ছিল দোকান। কম ছিল অটো-টোটো। বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। জোর করে ধর্মঘট সফলে প্রেমবাজার, আইআইটি এলাকা থেকে ৩২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খড়্গপুর শিল্প তালুকে কারখানা খোলাই ছিল।
ঘাটাল দাসপুর, সোনাখালি, ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোনা, খড়ার, রামজীবনপুরেও বাস চলেনি। বন্ধ ছিল দোকান, ব্যাঙ্ক খোলেনি। তবে সরকারি দফতর ছন্দেই ছিল। দাসপুরের গৌরায় রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল অধিকারী-সহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। গড়বেতার তিনটি ব্লকে বাম, কংগ্রেস পথে নামলেও ধর্মঘটের সাড়া পড়ে মিশ্র। বেলদা, দাঁতন, কেশিয়াড়িতে প্রভাব পড়ে অল্পবিস্তর। দাঁতনে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে সিটুর অবরোধে যান চলাচল ব্যাহত হয়। দিনের শেষে মেদিনীপুরে মিছিল করে ধর্মঘট সফল হয়েছে বলে দাবি করেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএম নেতা তাপস সিংহ বলেন, ‘ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা হলেও তা সর্বাত্মক হয়েছে।’’
ধর্মঘটের সমর্থনে সকাল থেকে অরণ্যশহর দাপিয়ে বেড়ান বাম নেতা-কর্মীরা। সকালে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে হাওড়াগামী স্টিল এক্সপ্রেস অবরোধ করা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় ৩০ মিনিট পর অবরোধ ওঠে। লালগড়ের বৈতার বালিশিরায় মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ধর্মঘটীদের গোলমালে জখম হন এক মহিলা। তাঁকে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে অভিযোগে ঝাড়গ্রাম-ধেড়ুয়া রাস্তা ঘন্টা তিনেক অবরোধ হয়। ঝাড়গ্রাম শহরে এক মহিলা ডাকঘর কর্মী আহত হন জোর করে শাটার নামাতে গেলে। শহরে দোকান, ব্যাঙ্ক, পেট্রল পাম্প বন্ধ ছিল। সিটুর ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পার্থ যাদবেরও দাবি, ‘‘জেলায় ধর্মঘট সফল হয়েছে।’’ আইএনটিটিইউসি-র জেলা নেতা গৌরাঙ্গ প্রধান বলেন, ‘‘ধর্মঘটের নামে বামেরা তাণ্ডব চালিয়েছে।’’