ভাঙা মঞ্চ। কার্যালয়ের শহিদ বেদিতে লাগানো তৃণমূলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র ।
এলাকায় শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় মিছিলের পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সম্মেলন করেছিল সিপিএম। রাতে কেশিয়াড়িতে সেই সম্মেলনের মঞ্চ, শহিদ বেদি ভেঙে, দলীয় পতাকা পুকুরে ফেলার অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও একে সিপিএমের ‘সাজানো ঘটনা’ বলে দাবি করেছে শাসক দল।
মঙ্গলবার সিপিএমের হাতিগেড়িয়া এরিয়া কমিটির তৃতীয় সম্মেলন হয় দুধেবুধে বুথের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। তার আগে বাংলাদেশের ঘটনার প্রেক্ষিতে শান্তি-সম্প্রীতির বার্তা দিতে মিছিল হয়। বিকেল ৩টে পর্যন্ত চলে সম্মেলন। ছিলেন রাজ্য ও জেলাস্তরের নেতৃত্ব। সিপিএমের অভিযোগ, সম্মেলন চলাকালীন কিছুটা দূরে তৃণমূল সভা করে। তবে মাইক বাজিয়ে তাদের সম্মেলন বানচালের চেষ্টা হয়। তাও সুষ্ঠুভাবেই সম্মেলন শেষ করে সকলে বাড়ি ফিরেছিলেন। বুধবার সকালে জানা যায়, সিপিএম কার্যালয়ের সামনে সম্মেলন মঞ্চ ভাঙা, পতাকা খুলে পুকুরে ফেলা হয়েছে। কিছু পতাকা পোড়ানো হয়েছে। শহিদ বেদিতে তৃণমূলের পতাকাও লাগানো হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে দলীয় কার্যালয়েও। সেখানেও বেঁধে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের পতাকা। সিপিএমের অভিযোগ, রাতে তৃণমূলের ৬-৭জন এসে এ কাজ করেছে।
হাতিগেড়িয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক গৌতম রায় জানান, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই বুথে সিপিএম জিতেছে। দীর্ঘদিন পর এলাকায় সম্মেলন হল। ভাল জমায়েত হয়। তা মানতে না পেরে আক্রোশে এই কাজ করেছে তৃণমূল। গৌতমের দাবি, এ দিন সকালে তৃণমূলের পতাকা খুলে কার্যালয় ফের নিজেদের দখলে নেন সিপিএম কর্মীরা। কেশিয়াড়ি থানাতেও সব জানানো হয়। সিপিএমের রাজ্য নেতা তাপস সিংহ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না হয় তা হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।"
ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু’দিন কেশিয়াড়ির সর্বত্র প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিএম। তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অশোক রাউতের দাবি, ‘‘এটা সিপিএমের সাজানো ঘটনা। তৃণমূলের যোগ নেই। চক্রান্ত করে তৃণমূলের নামে অপপ্রচার করতে এই কাজ নিজেরাই করেছে।" তাঁর আরও বক্তব্য, "বিকেলে আমাদের দলের সম্মেলন ছিল। বহু মানুষের জমায়েত দেখে ওরা (সিপিএম) ক্ষিপ্ত হয়ে সেখান থেকে রাতে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে নিজেরাই এ সব করেছে।" যদিও রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির অবশ্য দাবি, এটা একেবারেই পারিবারিক বিবাদ। পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘দু’দলই তো ইন্ডিয়া জোটের শরিক। এটা একেবারে পারিবারিক বিবাদ। বড় ভাই ও ছোট ভাইয়ের ঝামেলা।’’