ফাইল চিত্র।
এখনই ঘরে ফেরা নয়। জামিনে মুক্ত নেতাই-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত ফুল্লরা মণ্ডলকে নিয়ে কার্যত সতর্ক সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম সূত্রের খবর, পরিস্থিতির উপর নজরে রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে। ততদিন পর্যন্ত ফুল্লরা নেতাইয়ে যাবেন না। ঝাড়গ্রামে দলের ব্যবস্থাপনায় যেমন আছেন, তেমনই থাকবেন।
আজ, মঙ্গলবার মেদিনীপুরের বিশেষ আদালতে নেতাই মামলার বিচারের দিন। ফুল্লরাকে ওই আদালতে হাজিরা দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট ফুল্লরার জামিনের নির্দেশে জানিয়েছে, তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাইরে থাকতে হবে। সেই মত ফুল্লরা ঝাড়গ্রাম জেলা সদরে রয়েছেন। তবে সিপিএমের একাংশ মনে করছেন, নেতাইয়ের ঘটনা যখন ঘটেছিল, তখন লালগড় এলাকাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অধীনে ছিল। এখন লালগড় ঝাড়গ্রাম জেলার অধীনে। ফলে, ফুল্লরা কোথায় থাকবেন সেই ব্যাখ্যাও স্পষ্ট হওয়া জরুরি। ফুল্লরার বাড়ি নেতাই গ্রামে। সেখানে মামলার সাক্ষীরাও থাকেন। তাই ফুল্লরা গ্রামে ফিরলে যদি কোনও মহল থেকে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়, তা হলে সেটা রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হবে বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাই আপাতত ফুল্লরা নেতাইয়ে যাবেন না। দলের বৈঠক এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আগামী ৩১ অগস্ট বুধবার ঝাড়গ্রামে দলের এক কর্মসূচিতে আসছেন রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র ও সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সম্পাদক কণীনিকা ঘোষ বসু। ওই দিন দুই রাজ্য নেতা ঝাড়গ্রামে এসে ফুল্লরার বিষয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশ দিতে পারেন বলে সিপিএম সূত্রের খবর।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএমের শিবির থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় চার মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসীর। জখম হন ২৮ জন। ওই মামলায় বিভিন্ন সময়ে ফুল্লরা-সহ ২০ জন গ্রেফতার হন। প্রথমে মামলাটি ছিল সিআইডির। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত ভার নেয় সিবিআই। তবে ঘটনার সময়ে দুই অভিযুক্ত নাবালক থাকায় তাঁরা পরে জামিনে ছাড়া পান। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও ফুল্লরার জামিন মঞ্জুর করে। ফুল্লরার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি নেতাই-কাণ্ডের জখমদের হাসপাতালে যেতে বাধা দিয়েছিলেন। সব দিক খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। ২০১৪ সালের জুনে গ্রেফতার হন ফুল্লরা। প্রায় আট বছর বন্দি-জীবন কাটিয়ে গত শুক্রবার তিনি মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধগার থেকে ছাড়া পান। নেতাই-কাণ্ডে এখন জেলবন্দি আছেন ১৭ জন।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘আপাতত ফুল্লরাদি ঝাড়গ্রামে আছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু এখন জেলা ভাগ হয়ে গিয়েছে। তাই ফুল্লরাদি কোথায় থাকবেন সেটা আইনজীবীর মাধ্যমে মেদিনীপুর বিশেষ আদালতের কাছে জানতে চাওয়া হবে।’’