নারগিস পারভিন। নিজস্ব চিত্র।
সিপিআইয়ের টিকিটে জিতেও দলবদল করে তৃণমূলের উপ-পুরপ্রধান হয়েছিলেন। সদ্য সমাপ্ত পুরভোটে রেলশহরের সেই প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফ ‘শাস্তি’ পেয়েছেন। নিজের ওয়ার্ডে হারতে হয়েছে হানিফের স্ত্রীকে। তবে পুরনো অঙ্কেরই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে ওই ওয়ার্ডে। ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতে এ বার তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছেন সিপিআই কাউন্সিলর নারগিস পারভিন।
খড়্গপুর শহরের ৪ন ম্বর ওয়ার্ড থেকে ৫,২১৭ ভোটে জিতেছেন নারগিস। হারিয়েছেন প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের স্ত্রী মমতাজ কুদ্দুসিকে। এরপরেই তৃণমূলে যোগ দিতে মরিয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতির কাছে আর্জি জানিয়েছেন নারগিস। কিন্তু কেন? নারগিস বলছেন, “এলাকায় গত কয়েক বছরে কোনও উন্নয়ন হয়নি। মানুষের জন্য এলাকায় উন্নয়ন করতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানুষের জন্য সর্বদা উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। তাই ওঁর সঙ্গী হতে তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছি। বোর্ড গঠনের আগেই যোগ দিতে চাই।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা মানছেন, “নারগিস পারভিন আমাদের কাছে একটি আবেদনপত্র দিয়েছেন। বোর্ড গঠনের পরে দলের সঙ্গে আলোচনা করে ওঁকে নেওয়ার বিষয়ে ভাবা হবে।”
২০১৫ সালের পুর-নির্বাচনেও সিপিআইয়ের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়ে উপ-পুরপ্রধান হন হানিফ। সে বার ১১টি ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে বোমা-বন্দুক দিয়ে অন্য দলের কাউন্সিলর ভাঙিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এ বার অবশ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে বেগ পেতে হয়নি শাসক দলকে। ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতেই জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। এর পরেও স্বেচ্ছায় বাম কাউন্সিলরের তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছায় শোরগোল পড়েছে। হানিফের কটাক্ষ, “দলবদল করায় আমাকে গদ্দার বলে নির্বাচনে প্রচার করে জয়ী হয়েছেন সিপিআই প্রার্থী। এ বার তো অন্য দলের কাউন্সিলরদের উপর কোনও চাপ নেই। তাহলে এখন যিনি দলবদল করতে চাইছেন তাঁকে মানুষ কী বলবে!” তৃণমূল নারগিসকে নিলে তিনি দুঃখ পাবেন বলেও জানান হানিফ।
তবে কি প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করছে বামেরা? জেলার সিপিআই নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “অতীতে যাঁরা দলবদল করেছে মানুষ তাঁদের যথাযোগ্য শাস্তি দিয়েছে। ওই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ সিপিআইয়ের সঙ্গে ৫২ বছর ধরে রয়েছেন। এর পরেও যদি কেউ আমাদের টিকিটে জিতে দলবদল করেন তবে মানুষ তাঁকেও ক্ষমা করবে না।” বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের আবার খোঁচা, “রাজ্যে তো বামেরা অস্তিত্বহীন। ওই ওয়ার্ডেও সাংগঠনিক দুর্বলতায় সিপিআই নিজেদের জয়ী প্রার্থীকে ধরে রাখতে পারছে না।”