west medinipur

ভীতি না সতর্কতা, রোগী কমায় ধন্দ 

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ৩০০ শয্যার দুই তৃতীয়াংশের বেশি এখনও ফাঁকা। পুরুষ মেডিসিন বিভাগে রোগী নেই বললেই চলে।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি

দেশ জুড়ে করোনা টিকাকরণ শুরু হয়েছে। সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে জেলায়। ভীতি কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে জেলাবাসী। কিন্তু খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে অধিকাংশ ওয়ার্ডে প্রায় ফাঁকা। ওই হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ড এখন রোগীশূন্য। তারপরেই এই ছবি কেন, সেই নিয়ে ধন্দে রয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ৩০০ শয্যার দুই তৃতীয়াংশের বেশি এখনও ফাঁকা। পুরুষ মেডিসিন বিভাগে রোগী নেই বললেই চলে। একই অবস্থা শিশু বিভাগে। পুরুষ শল্য বিভাগেও অর্ধেকের বেশি শয্যা ফাঁকা। মহিলা মেডিসিন, মহিলা শল্য, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের বিভাগ, আগুনে পোড়া রোগীর বিভাগকে একত্রে একটি ওয়ার্ড হয়েছে। সেখানেও ফাঁকাই থাকছে শয্যা।
অথচ করোনার আগে পর্যন্ত ওই হাসপাতালে রোগীদের চাপ এত বেশি থাকত, যে শয্যা মিলত না। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সারাবছর রোগীর চাপ বেশি থাকলেও শীতে চাপ একটু কম থাকে। কিন্তু এখন হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছেন না বললেই চলে। করোনা পরিস্থিতি থেকে যখন অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছি তখন এমন পরিস্থিতির কারণ আমরাও খুঁজছি।”

ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে গত মার্চ থেকেই রোগী ভর্তি কমেছিল সেখানে। তবে তার পরেও দুর্গাপুজোর আগে পর্যন্ত পুরুষ মেডিসিন বিভাগে দৈনিক গড়ে ২৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছিলেন। অথচ সেই বিভাগেই এখন দৈনিক গড়ে ১০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকছেন না। গত তিন দিনের হিসেবে গড়ে পুরুষ শল্য বিভাগে ৪৮টি শয্যার ২৮টি ফাঁকা। শিশু বিভাগের ২৫টি শয্যার মধ্যে ৩টিতে শিশু ভর্তি রয়েছে। এমনকি ট্রমা কেয়ারেও ১০টির মধ্যে ৭টি ফাঁকা। শুধুমাত্র প্রসূতি বিভাগের ৪০টি শয্যায় মধ্যে ৩০টি ভর্তি।

Advertisement

জেলার অন্য সরকারি হাসপাতালগুলির ছবি অবশ্য এরকম নয়। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি ও ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে রোগীর সংখ্যা এখন মোটের উপরে স্বাভাবিক বলেই জানা গিয়েছে। ঘাটালের সুপার সম্রাট রায়চৌধুরী বলেন, “আমাদের যে সংখ্যক রোগী রয়েছে তা স্বাভাবিক বলা যায়।” ডেবরার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আরিফ হাসান জানান, ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে ১৭৬টি শয্যা। তার মধ্যে ১২০টি ভর্তি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুও বলেন, “এখন তো রোগী ভর্তি স্বাভাবিক রয়েছে।”

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ছবিটা ভিন্ন কেন, তার সঠিক কারণ চিকিৎসকেরাও বলতে পারছেন না। ওই হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অশোক পাল বলেন, “আমার ব্যক্তিগত ক্লিনিকেও কম রোগী আসছে। করোনার একটা ভীতি হয়তো রয়েছে। তবে আমার ধারণা কিছু মানুষ যেহেতু মাস্ক পরছেন ও তাঁদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা বেড়েছে তাই রোগও কিছুটা কমেছে।” একই সুর খড়্গপুর হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দুর গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় মাস্কের ব্যবহার ও হাত ধুয়ে খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও বেড়েছে। সেটাও রোগী কমার অন্যতম কারণ হতে পারে। যদি এটা ঠিক হয় তবে বলব, ইতিবাচক ইঙ্গিত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement