—ফাইল চিত্র।
চলতি মাসেই পশ্চিম মেদিনীপুরে দৈনিক করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছাড়াতে পারে পাঁচশো। গত কয়েক দিন ধরে জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা যে গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করে এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। পরিস্থিতি দেখে তড়িঘড়ি কোভিড হাসপাতালও চালু করা হল। বৃহস্পতিবার থেকে শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালটি পুরোদস্তুর কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনার প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়েও এই হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজ করেছিল। অন্য কয়েকটি হাসপাতালেও কোভিড- শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে যাবতীয় পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, সংক্রমণ মোকাবিলায় সচেতনতা প্রচার চলছে। মাস্ক পরার কথা জানানো হচ্ছে। দূরত্ব বজায় রাখার কথাও জানানো হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পিনাকীরঞ্জন প্রধানের কথায়, ‘‘জেলায় পর্যাপ্ত কোভিড-শয্যা রয়েছে। আরও শয্যা প্রস্তুত হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, এখনই পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫৫৪টি শয্যা চালু রয়েছে। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি, ডেবরা সুপার স্পেশালিটি, শালবনি কোভিড হাসপাতাল, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই সংখ্যক শয্যা রয়েছে। সব থেকে বেশি শয্যা রয়েছে শালবনি কোভিড হাসপাতালেই, ২০০টি। শালবনির এই হাসপাতালের সুপার মনোজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব শয্যাই প্রস্তুত। এ বার রোগী ভর্তি শুরু হবে।’’ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮ জন করোনা সংক্রমিত। বাকি ৫৩৬টি শয্যা খালি রয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্রফেসর তথা আইএমএ-র মেদিনীপুর শাখার সম্পাদক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইত বলেন, ‘‘খুবই দ্রুত গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। এখন হয়তো কোভিড শয্যা দখলের হার বেশি নয়, তবে কিছু দিনের মধ্যে এই হারও বাড়বে।’’ মঙ্গলবার জেলায় নতুন করে ১৬৬ জন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছিল। সোমবার ৮৩ জন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছিল। সেখানে বুধবার জেলায় নতুন করে ২০০ জন সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে। মঙ্গলবার দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ৫.৯৫ শতাংশ। বুধবার তা বেড়ে হয়েছে ৭.৪৭ শতাংশ। অনেকে মনে করাচ্ছেন, অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের সময়ে খুব ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছিল দৈনিক সংক্রমণ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে মাঝারি গতিতে বেড়েছে সংক্রমণ। ওই দুই ঢেউকে ছাপিয়েছে এ বারের পরিস্থিতি।
মেদিনীপুর, খড়্গপুর— দুই শহরের ১২টি এলাকা মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় এসেছে। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, এই সব জ়োনে নিয়ন্ত্রণ কড়া না হলে দৈনিক সংক্রমিত এ মাসেই ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে।