বেপরোয়া: মাস্ক ছাড়াই দিব্যি রাস্তায় চলাফেরা। মঙ্গলবার তমলুকের বড়বাজারে। নিজস্ব চিত্র।
অপরাধ দমন হোক বা রাস্তার যান নিয়ন্ত্রণ, বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া থেকে আমজনতাকে সচেতন করা— করোনা-কালে সব সময়েই ‘ময়দানে’ থাকে পুলিশ প্রশাসন। জেলায় সেই পুলিশেরই একাধিক কর্মীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সমানে আসায় চিন্তা বাড়ছে।
গত রবিবার ভগবানপুর থানার দু’জন কনস্টেবল করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই রেশ কাটার আগেই সোমবার সন্ধ্যায় ফের একজন পুলিশ অফিসার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। বারবার ভগবানপুর থানার পুলিশ কর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ছে অন্য পুলিশ কর্মীদের মধ্যে। উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিক থানার সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে।
পুলিশ কর্মীর একাংশ অভিযোগ করেছেন, সংক্রমণের পর থানা এবং পুলিশ আবাসন চত্বর জীবাণুমুক্ত ছাড়া আর কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। নিজেদের সুরক্ষায় নিজেরাই স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্ক ব্যবহার করে তাঁরা করোনা যুদ্ধের ময়দানে নেমেছেন। কোথাও নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে স্যানিটাইজ়ার টানেল বসিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘চাকরির জন্য এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করতে হচ্ছে। হয়তো কিছু দিনের মধ্যে আমারাও করোনা সংক্রমিত হয়ে যাব। সারাক্ষণ আতঙ্ক নিয়ে রয়েছি।’’
সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে সরকারি এবং বেসরকারি সমস্ত গণ পরিবহণগুলিতে যাত্রী তোলার আগে স্যানিটাইজ় করা বাধ্যতামূলক। একই সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হয় থানার গাড়িগুলির ক্ষেত্রেও। কিন্তু অভিযোগ, জেলার থানাগুলিতে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় কার্যত বন্ধই রয়েছে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার কাজ। এগরা মহকুমায় তিনটি থানা এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের অফিস ও সার্কেল ইনস্পেক্টর অফিস মিলিয়ে ১২টি পুলিশ ভ্যান রয়েছে। আসামী এবং অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্সের জন্য একটি অতিরিক্ত ভ্যান রয়েছে। অভিযোগ, গত এক মাসে সেই গাড়িগুলি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হয়নি।
ভগবানপুর থানার পুলিশ কর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা সামনে আসার পরে মঙ্গলবারই পটাশপুর থানার ৪০ জন পুলিশ কর্মীর করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে পটাশপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘ভগবানপুর থানার সকল পুলিশ কর্মীদের করোনা সচেতনতায় সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত থানা চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)