প্রতীকী ছবি
রেশন কার্ড নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের আমদাবাদ ১ নম্বর অঞ্চলের সুবদি গ্রামের বাসিন্দারা বছর দু’য়েক আগে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তাঁরা কার্ড পাচ্ছিলেন না। শেষে পৌঁছেছিলেন ব্লক খাদ্য দফতরে। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের রেশন কার্ড দিয়ে গত দু’বছর ধরে নন্দীগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দিন্দা রেশন তুলছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার সুবদি গ্রামের কিছু মানুষ নন্দীগ্রাম ২ বিডিও-র কাছে সঞ্জয় দিন্ডার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। ব্লক খাদ্য দফতরের পর স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে গেলে তাঁদের জানানো হয়, রেশন কার্ডগুলি অন্য কেউ সই করে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। এরপর স্থানীয় রেশন ডিলার প্রকাশ জানার কাছে আবেদনকারীরা গেলে রেশন ডিলার জানান, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দিন্দার কাছে ৮১টি রেশন কার্ড রয়েছে।
প্রকাশ জানার কথায়, ‘‘সঞ্জয় দিন্দা রেশন কার্ডের বদলে সই করা কুপনের বিনিময়ে রেশন দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন। তাই বাধ্য হয়ে সই করা কুপনেই রেশন দিতাম।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ওই ৮১ জনের রেশন কার্ডে গত দু’বছর ধরে রেশন তুলছেন। রেশন কার্ডের আবেদনকারী ভানুচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’বছর আমরা রেশন কার্ড পাইনি। শেষমেষ শাসক দলের নেতার কাছ থেকে উধাও হয়ে যাওয়া রেশন কার্ডের খোঁজ মিলল।’’
এই প্রসঙ্গে রেশন ডিলার প্রকাশ জানা আরও বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক আগে থেকেই কর্মাধ্যক্ষ রেশন কার্ড বা ওঁর সই করা কুপন দিয়ে রেশন তুলছেন। প্রথমে রেশন দিতে না চাওয়ায়, আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ছ’মাস আগেই আমি ওই কার্ডগুলিতে আর রেশন দেব না বলে জানিয়েছিলাম।’’ যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় বলছেন, ‘‘একই লোকের নামে দু’টি করে রেশন কার্ড ছিল। একজন যাতে দু’জনের সুবিধা না পেতে পারেন, সেই জন্য সব রেশন কার্ডগুলো নিজের কাছে রেখেছিলাম। ১৫ দিন আগেই পঞ্চায়েত অফিসে সব রেশন কার্ড জমা দিয়েছি। জনস্বার্থে বেআইনি কাজ করেছি। ব্যক্তি স্বার্থে নয়।’’
ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘কাটমানি খেয়েও শাসক দলের নেতাদের পেট ভরছে না। এখন গরিব মানুষের খাদ্যও তাঁরা চুরি করছেন। রেশন নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ বিজেপির পক্ষ থেকে বারবার তোলা হয়েছিল, অবশেষে হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলছে।’’ নন্দীগ্রাম ২-এর বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’