শিল্পীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। নিজস্ব চিত্র
করোনা আবহে অনিশ্চয়তা আর আর্থিক অনটনে দিন কাটছে চণ্ডীপুরের হবিচক-নানকারচক-মুরাদপুর গ্রামগুলির পটুয়া পরিবারগুলি।
সম্প্রতি হবিচক নানকারচক লোকশিক্ষা শিল্প পটুয়া সমিতির ১৬০টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যসামগ্রী।
এই পটুয়া পরিবারগুলির আয় হত বিভিন্ন মেলা ও উৎসবে তাঁদের আঁকা পট বিক্রি করে। কিন্তু গত কয়েক মাসে করোনার জন্য বন্ধ সব মেলা। ফলে আয় নেই। উৎসব কিংবা মেলার কয়েকটা মাস বাদ দিয়ে বাকি সময়ে ক্ষুদ্র চাষি বা অসংগঠিত শ্রমিকের কাজ করেন এঁরা। দিনের শেষে চলে আপন মনে পট আঁকা। কারণ এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ। কিন্তু সেই চর্চাতেই বাদ সেধেছে করোনা। বাড়ির বাইরে বেরনোর উপায় নেই। তাই পট দেখানো বা বিক্রি দূরঅস্ত। পটশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে গড়ে উঠেছে হবিচক নানকারচক লোকশিক্ষা শিল্প পটুয়া সমিতি। এ বার তাঁদেরই উদ্যোগে সমিতির সম্পাদক আবেদ চিত্রকর ও অন্যান্যদের উদ্যোগে স্থানীয় হবিচক-নানকারচক-মুরাদপুর ও জেলার অন্যান্য জায়গায় ১৬০টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় চাল, ডাল, আনাজ। উদ্যোক্তাদের তরফে অরুণাংশু প্রধান জানান, পটশিল্পীদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এর মাঝেও এঁরা সচেতনতার বার্তা দিয়ে পট আঁকছেন। ওঁদের পাশে দাঁড়াতেই এই ত্রাণ।
নন্দকুমারের ঠেকুয়া চক, পাঁশকুড়ার কেশববাড়, মাতঙ্গিনী ব্লকের কাখড়দায় চল্লিশটি পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন, কিছু সহৃদয় ব্যক্তি ও এক প্রবাসীও এঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মুরাদপুরের বকুল চিত্রকর বা নানকার চকের সোফিয়া চিত্রকরেরা ক্রাণের জিনিস পেয়ে খুশি। তাঁদের কথায়, ‘‘কাজ নেই, পটের বিক্রি নেই। সংসার চালানো এই সময়ে কঠিন। তাই যে কোনও সাহায্যই বেঁচে থাকার সম্বল।’’