Coronavirus

করোনাতেও সক্রিয় টিম পিকে

রাজ্যের বাকি জেলাগুলির সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের উপরেও ‘টিম পিকে’র নজর রয়েছে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২০ ০৪:০৮
Share:

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র

লকডাউনে ঘরবন্দি সকলেই। রাস্তায় নেমে রাজনৈতিক কর্মসূচিও বন্ধ। এ রাজ্যে তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে আসা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দলের তথ্য সংগ্রহ অবশ্য থেমে নেই। করোনা আবহেও পুরোদস্তুর সক্রিয় ‘টিম পিকে’।

Advertisement

রাজ্যের বাকি জেলাগুলির সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের উপরেও ‘টিম পিকে’র নজর রয়েছে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা। বোঝার চেষ্টা করেছে, কোন কোন ক্ষেত্র কেমন ভাবে চলছে। কে সক্রিয়, কে-ই বা নিষ্ক্রিয়। সূত্রের খবর, করোনা মোকাবিলায় জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যাপারেই বেশি খোঁজ নিয়েছে ওই টিম। পাশাপাশি রেশন ব্যবস্থা, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো প্রভৃতি বিষয়েও খোঁজখবর নিয়েছে।

‘টিম পিকে’র এই তৎপরতার বিষয়ে সরাসরি কিছু না বলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘দলীয়ভাবেও বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ‘টিম পিকে’র এক সদস্য মানছেন, ‘‘কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে।’’

Advertisement

করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাকে গোড়া থেকেই খুব বড় করে তুলে ধরছে পিকের টিম। সমাজমাধ্যমে নজরকাড়া গ্রাফিক পোস্ট হচ্ছে। বার্তা দেওয়া হচ্ছে, নাগরিকদের রক্ষার স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী অকুতোভয়। নিজের রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করছেন, তাতে তাঁর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা অনেক বেড়ে গিয়েছে— এই রকম প্রচার সমাজ মাধ্যমে চালাচ্ছে টিম পিকে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ব্যাপারে ঠিক কী কী তথ্য পৌঁছেছে টিম পিকের কাছে? জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যাপারেই বেশি খোঁজ নিয়েছে তারা। মেদিনীপুরে দু’টি করোনা হাসপাতাল চালু হয়েছে। একটি আবাসের কাছে লেভেল-১। আরেকটি মোহনপুরের কাছে লেভেল-২। ওই টিম না কি জানতে পেরেছে, লেভেল-১ হাসপাতালটি ভালভাবেই চলছে। কিন্তু লেভেল- ২ হাসপাতালটি ভালভাবে চলছে না। এখানে চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়মিত নয়। এখানে প্রশাসনিক সক্রিয়তাও ততটা নেই। মেদিনীপুরের এই করোনা হাসপাতালে ইতিমধ্যে কয়েকজন মারা গিয়েছে। সকলেরই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। তবে একাধিক ক্ষেত্রে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানেননি। রেশন ব্যবস্থায় আরও নজরদারি প্রয়োজন বলে জানতে পেরেছিল ওই টিম। ঘটনাচক্রে, চলতি মাস থেকে জেলায় সেই নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদেরও ‘পরিদর্শক’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। মেদিনীপুরের এক এএসআই-র সম্পর্কেও না কি কিছু তথ্য পৌঁছয় ওই টিমের কাছে।

দলের উপর থেকে নীচ, পুরো খোলনলচেটাই ‘টিম পিকে’ বদলে দিচ্ছে বলে ধারণা রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। জানা যাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে তৃণমূলে বিধায়ক, নেতা-কর্মীদের কাজের দিকেও নজর রয়েছে টিমের। কে, কেমন কাজ করছেন, সে সব নজরে রাখা হয়েছে। সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। মূল্যায়নও হচ্ছে। জেলার একাংশ তৃণমূল বিধায়ককে এলাকায় দেখা যাচ্ছিল না। দলীয় সূত্রে খবর, পিকের টিম পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেছে জানতে পেরে ওই বিধায়কেরা এলাকায় যেতে শুরু করেছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সময়েও বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক নজর রেখে ভোট-প্রচারের জমিই তৈরি করতে চাইছে টিম পিকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement