—ফাইল চিত্র।
ধর্মস্থান খোলায় ছাড় মিলেছে। প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারগুলিতে। সরকারি নির্দেশের পরে শনিবারই বেশ কয়েকটি ধর্মীয় স্থানের পরিচালন কমিটির সদস্যেরা জরুরি ভিত্তিতে আলোচনায় বসেন। বিধি মেনে কীভাবে ভক্তদের সামলানো যায় সেই আলোচনা হয়। নির্দেশানুযায়ী পয়লা জুন সকাল থেকেই দুই জেলার বহু প্রাচীন ও বড় ধর্মস্থানগুলিতে স্বেচ্ছাসেবক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। নেওয়া হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতাও।
মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির সংস্কার কমিটির সম্পাদক পল্টু সেন বলেন, ‘‘পয়লা জুন থেকে মন্দির আগের মতোই খোলা থাকবে, ভক্তদের সামাজিক দূরত্ব বিধি ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হবে। মন্দিরের বাইরে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার রাখার কথা ভাবছি।’’ মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির পক্ষে আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘‘আমরা মসজিদগুলির বাইরে হ্যান্ড স্যানিটাজ়ার রাখার আর্জি জানাচ্ছি। যাতে অনেকের ভিড় না হয় সেই আর্জিও জানাচ্ছি।’’ শেখপুরায় গির্জা খোলার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
তবে পয়লা জুন থেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে কী ভাবে ছোট পরিসরের ধর্মীয় স্থানগুলি খুলবে তা নিয়ে রেলশহরে চলছে জল্পনা। তেলুগু সম্প্রদায়ের বড় উৎসব মাতা পুজো লকডাউনের জেরে এ বার হচ্ছে না। তাই মন্দির খুললে মানত করতে ভক্তদের ভিড় বাড়বে বলে মনে করছেন খরিদার সোলাপুরি মাতা মন্দিরের সম্পাদক এস সত্যনারায়ণ। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’ শহরের গির্জার ক্ষেত্রেও নানা পরিকল্পনা চলছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ক্যাথরিন গুহ বলেন, ‘‘এতদিন তো গির্জায় যাওয়াই হয়নি। মনে হচ্ছে জুনের প্রথম রবিবার গির্জা খুলবে। তখন নিশ্চয়ই যাব।’’
ঘাটালের বরদা চৌকানের বিশালাক্ষী মন্দিরের এক সেবাইত বলেন, ‘‘মায়ের মন্দিরে আবার সবাই আসবে, ভাল লাগবে।’’ গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভক্তদের পুজো দেওয়ার ভিড় থাকে বরাবর। এ ক’দিন নিত্যপুজো হলেও ভিড় হচ্ছিল না। সোমবার থেকে মন্দিরে আসা ভক্তেরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন তা দেখা হবে বলে জানিয়েছে মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ড। গড়বেতার আউসাবান্দি মসজিদ কমিটির কর্মকর্তা রমজান চৌধুরী আবার বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা হবে আশেপাশের সব মসজিদই।’’
ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড়ে শতাব্দী প্রাচীন কনকদুর্গা মন্দিরে লকডাউনে নিত্যপুজো চললেও সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ বন্ধই ছিল। মন্দির উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সমীর ধল বলেন, ‘‘সোমবার থেকে গর্ভগৃহে কেউই ঢুকতে পারবেন না। মন্দিরে ঢোকার মুখে পুজোর সামগ্রী ও নামগোত্র লিখে জমা দিতে হবে। দূর থেকে দেবীকে দর্শন করতে হবে।’’ মন্দির চত্বরে থাকবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আর মাস্ক না পরলে প্রবেশ নিষেধ। মন্দিরের প্রবেশপথ স্বয়ংক্রিয় সেন্সর যুক্ত স্যানিটাইজ়ার স্প্রে গেট বসানোর পরিকল্পনাও চলছে। ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি বাজারের কালী মন্দিরের পূজারী মানব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একজন করে ঢুকে পুজো দিতে পারবেন। মাস্ক পরতেই হবে।’’