চুল্লিতে ওঠেনি। মাঠেই পড়ে কাঁচা ইট। কাঁথির একটি ইটভাটায়।
জেলার ইটভাটাগুলিতে কাঁচা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ইট। আগুনে পুড়িয়ে কবে সেগুলিকে ব্যবহারের যোগ্য করে তোলা যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ইটভাটার মালিকরা। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুর-সহ গোটা রাজ্যের ইটভাটাগুলি চালুর দাবি জানিয়ে মুখ্য সচিব রাজীব কুমার সিংহের কাছে লিখিত ভাবে চিঠি লিখল ইটভাটা মালিক সংগঠন।
লকডাউন পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশ মেনে ইটভাটাগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য দিকে, সারা রাজ্যে এখন যাবতীয় পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ। ফলে জেলার ইটভাটাগুলিতে আটকে পড়েছেন কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট ৫৮০টি নথিভূক্ত ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু কাঁথি মহকুমাতেই রয়েছে ২০০টি ইটভাটা। এগরায় রয়েছে ১০-১২টি, তবে সবচেয়ে বেশি ভাটা রয়েছে তমলুক এবং হলদিয়া মহকুমা এলাকায়।
দেশপ্রাণ ব্লকের মুকুন্দপুর এলাকার এক ভাটা মালিকের কথায়, ‘‘মার্চ মাসের শুরুতে কয়েক হাজার ইট তৈরি হয়েছিল। সেগুলি আপাতত শুকিয়ে শক্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনিক বাধায় ইটগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে নিতে পারছি না।’’ এদিকে গত কয়েকদিন ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এর ফলে কালবৈশাখীর আশঙ্কা করছেন ইটভাটা মালিকরা। তাঁদের আশঙ্কা, খোলা অবস্থায় পড়ে থাকা কাঁচা ইট জলে ধুয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সৌরভ সিংহ নামে এক ইটভাটা মালিকের দাবি, ‘‘এমনিতেই শ্রমিকদের মোটা অঙ্কের টাকা মজুরি মিটিয়ে ব্যবসা সামলানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। তারপর করোনার জেরে ইট পোড়াতে না পারায় এখন পুরোপুরি ব্যবসা বন্ধ। কী ভাবে সবকিছু সামলাবো ভেবে পাচ্ছি না।’’
গোটা জেলায় আপাতত ২০-২২ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ইটভাটাগুলোতে রয়েছে। যাঁদের প্রায় সকলেই প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, বিহার কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে এসেছিলেন। গত নভেম্বর মাস থেকেই তাঁরা জেলার ইটভাটাগুলিতে রয়েছেন। প্রসঙ্গত, তাঁদের মধ্যে কারও করোনা সংক্রমণ এখনও ধরা পড়েনি। তবু লকডাউনের নির্দেশিকা মেনে ভাটাগুলিতে জমায়েত করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে তাম্রলিপ্ত ব্রিকফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ইদ্রিস আলি বলেন, ‘‘কালবৈশাখী ঝড় হলে লক্ষ লক্ষ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে যাবে। ইটগুলি যাতে পুড়িয়ে ব্যবহারের যোগ্য করে তোলা যায়, তার জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।’’
তবে ২০ এপ্রিলের পর ইটভাটা শিল্পকে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে সরকার।