এগরার রাস্তায় চেনা ভিড়। নিজস্ব চিত্র
বিয়ে বাড়ি যোগে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় প্রথম করোনা যোগ সামনে আসে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের সংবেদনশীল তালিকায় রয়েছে এগরা। অথচ এই এগরাতেই এখন খোশ মেজাজে দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে মানুষ। রাস্তায় ভিড় দেখলে কে বলবে, যে এখানে লকডাউন কঠোর হয়েছে!
শুক্রবার হাওড়া, তমলুক-সহ একাধিক এলাকা ‘সিল’ করেছে প্রশাসন। এগরায় এখনও এরকম কোনও নির্দেশে আসেনি বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। শনিবার শহরের রাস্তায় দেখা গেল কেনাকাটা-বিক্রিবাটার ব্যস্ততা। এগরা থানার সামনে খোলা রয়েছে চা, পান, চশমার দোকান। চা দোকানে বসে চলছে দিব্যি আড্ডা। রাস্তায় চলছে টোটো। বাজারে উপচে পড়ছে ভিড়। নেই কোনও সামাজিক দূরত্বের বিধি নিষেধ। এ দিন সকালে মিলনী বাজার-সহ গোটা শহর এলাকার ছবিটা ছিল এমনই।
সুমিত দে নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘পুলিশের সামনে মানুষ লকডাউন ভেঙে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবে তো এগরাকে বিপদমুক্ত করা অসম্ভব।’’ এ নিয়ে এগরার এসডিপিও শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। চা দোকান খোলার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
এগরার মতোই অবস্থা হলদিয়াতেও। লকডাউন থোড়াই কেয়ার করছেন একাংশ বাসিন্দা। তবে হলদিয়া মহকুমার চারটি এলাকা সম্পূর্ণ ‘সিল’ করার ব্যাপারে শনিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ দিন সকালে ওই চারটি এলাকা পরিদর্শনে যান পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ এবং পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ফিরে এসে তারা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেই আলোচনায় ঠিক হয় ওই চারটি এলাকাকে ‘সিল’ করে দেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনও দোকান খোলা থাকবে না। এমনকী, মুদিখানা এবং ওষুধের দোকানও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। মানুষের সুবিধার কথা ভেবে ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হবে। সাধারণ মানুষের প্রয়োজন মাফিক জিনিসপত্র এবং ওষুধপত্র ওই স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেবেন। উল্লেখ্য, ওই চারটি এলাকা থেকেই কয়েকজন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তারপরেই এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
শিল্প শহরও ‘স্পর্শকাতর’ তালিকায় রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে এ নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি বলে জানা গিয়েছে। শহরের রাস্তায় এ দিন দিনভর ঘোরাঘুরি করছেন মানুষজন। হলদিয়া মহকুমা আদালতের পিছনে শনিবারের হাটে ভিড় ছিল দেখার মতো। সিটি সেন্টারের আশপাশে এখনও মোটরবাইকারদের ভিড়। দুর্গাচক ও মঞ্জুশ্রী মোড়েও ছিল একই অবস্থা।