বাস বন্ধই থাকল। নিজস্ব চিত্র
সরকারি নির্দেশিকা থাকলেও, মঙ্গলবারও চলল না বাস। যদিও সোমবার মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘গ্রিন জ়োন’ জেলাগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ জন যাত্রী অথবা বাসের মোট আসনের ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালানো যেতে পারে। জেলায় কোন রুটে বাস চলবে, সে ব্যাপারে জেলাশাসক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে শুধু ‘গ্রিন জ়োন’ জেলাগুলির মধ্যেই বাস চালানো যাবে এবং প্রতিদিন বাস জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যাত্রীদের পরতে হবে মাস্ক। মঙ্গলবার জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের জেলার মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে বাস চালাতে বলা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাকেও জেলার মধ্যে কয়েকটি রুটে বাস চালানোর জন্য অনুরোধ করা হবে।’’ দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ঝাড়গ্রাম ডিপোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সরকারি বাস চালানোর কোনও নির্দেশিকা আসেনি। এলেই বাস চালানো হবে। এখন কেবলমাত্র ঝাড়গ্রামে আটকে পড়া শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য প্রশাসনের চাহিদা মতো সরকারি বাস দেওয়া হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, বেসরকারি বাস মালিকরা জানাচ্ছেন, মাত্র ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে জেলার মধ্যে বাস চালালে তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ঝাড়গ্রাম জেলায় যে সব বাস চলে তার বেশিরভাগই বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে। কেবল জেলার মধ্যে চলে এমন বাসের সংখ্যা হাতেগোনা।
একাংশ বাস মালিকের দাবি, বাস বন্ধ থাকলেও কর্মীদের মাসোহারা দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালালে তাঁদের আরও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। আবার এই পরিস্থিতিতে যাত্রী পরিবহণ করলে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকতে পারে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলার দু’টি বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের আলোচনায় ডেকেছিলেন জেলাশাসক আয়েষা রানি। সূত্রের খবর, বৈঠকে বাস মালিক-প্রতিনিধিদের ঝাড়গ্রাম-বেলপাহাড়ি, ঝাড়গ্রাম-গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম-চিচিড়া ও ঝাড়গ্রাম-রগড়া— এই চারটি রুটে পরীক্ষামূলক ভাবে বাস চালানোর পরামর্শ দেন জেলাশাসক। ঝাড়গ্রাম জেলা বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ পাল বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাব।’’
সোমবার মুখ্যসচিবের সাংবাদিক বৈঠকের পরে রাতে সরকারি নয়া নির্দেশিকা জেলায় এসে পৌঁছয়। এরপর অনেকেই ভেবেছিলেন মঙ্গলবার বাস চলবে। ঝাড়গ্রাম শহরের শিবশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে এক পরিচিত লকডাউনে আটকে রয়েছেন। বাস চলবে ভেবে সকাল থেকে স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে ফিরে আসি।’’ আবার বাস চলবে ভেবে লালগড়ের বাসিন্দা বিএড-এর ছাত্রী অন্তরা মণ্ডলও অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘স চললে ঝাড়গ্রামে গিয়ে কয়েকটা প্রয়োজনীয় বই কিনব ভেবেছিলাম। বাসই তো চলল না।’’