অভিনব: প্রথম দিন বিনামূল্যেই খাওয়ানো হল করোনা চা। খড়্গপুরে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগেই সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়েছিল ‘করোনা ভাজা’র ছবি। খড়্গপুরের বাজারে বাস্তবে অবশ্য তেমন ভাজা মেলেনি। তবে এ বার খড়্গপুরেই পাওয়া গেল ‘করোনা চা’!
বৃহস্পতিবার খড়্গপুর টাউন থানার গেটের বাইরেই ‘করোনা চা’-এর ভ্রাম্যমাণ দোকানের দেখা মেলে। টোটোয় ওই চা দোকানে সাঁটানো হয়েছে বড় ফ্লেক্স। তাতে লেখা— কী কী উপাদানে তৈরি হয়েছে এই চা। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনেও এ দিন এই চা বিলি হয়েছে।
শহরের নিউ সেটলমেন্টের বাসিন্দা রেলকর্মী শ্রীকান্ত কুমার ভাম্যমাণ এই চা-স্টলের মূল উদ্যোক্তা। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর ভাই নবীন কুমার, সন্তোষ কুমার ও রামকৃষ্ণ কুমার। তাঁদের দাবি, এই চায়ে রয়েছে আদা, তুলসি, পুদিনা, এলাচ, গোলমরিচ, তেজপাতা, লবঙ্গ, জিরে, মধুর মতো নানা ফলদায়ী উপাদান। এতে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে এবং তা করোনার মতো ভাইরাসকে কাবু করবে বলেই দাবি উদ্যোক্তাদের।
চক্রধরপুর ডিভিশনে ট্র্যাক মেন্টিন্যান্স মেশিনের হেল্পার শ্রীকান্ত রেলের স্থায়ী কর্মী। শ্রীকান্ত বলেন, “আমি আগে সিআরপি-তে ছিলাম। এখন রেলে। এই করোনা সঙ্কটে চার ভাই মিলে ইন্টারনেট থেকে জেনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্যকারী নানা উপাদান দিয়ে এই চা তৈরির পরিকল্পনা করি। এই চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। তাতে করোনা সংক্রমণও ঠেকানো যাবে। তাই এর নাম দিয়েছি করোনা চা।” শ্রীকান্তরা নিজেরা সতর্কও ছিলেন। হাতে ছিল গ্লাভস, মুখে মাস্ক।
এ দিন বিনামূল্যেই এই করোনা চা বিলি করা হয় শহর জুড়ে। তবে আজ, শুক্রবার থেকে ১০ টাকায় মিলবে এক কাপ করোনা চা। শ্রীকান্ত জানান, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই ভাম্যমাণ চা দোকান খুলেছেন। প্রথম দিন পুলিশ, চিকিৎসকের মতো জরুরি পরিষেবায় যুক্তদের বিনামূল্যে চা খাইয়েছেন। তাঁর দাবি, চা বিক্রির টাকা সামাজিক কাজে খরচ করবেন।
আদৌ কি এই চায়ে কোনও উপকার হবে?
খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাসপাতালেও ওঁরা ওই চা বিলি করেছেন। এতে যে উপাদান রয়েছে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনুযায়ী এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আর করোনা চিকিৎসা তো অসম্ভব। পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন থাকছেই। তাই বিষয়টি প্রশাসনের ভাবা উচিত।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরীর বক্তব্য, “স্বেচ্ছায় কেউ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের চা খাওয়াতেই পারে। কিন্তু আমরা এ ভাবে চা বিক্রির কোনও অনুমতি দেব না। তাহলে অন্য চা-দোকানিরা সরব হবে। সঙ্গে ভিড় জমবে। তাছাড়া এই চা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে তার কোনও প্রমাণ নেই। আমি পদক্ষেপ করছি।”