পরীক্ষা: কোটা থেকে ফেরা ছাত্রছাত্রীদের নজরে রাখা হচ্ছে।
রাজস্থানের কোটায় পড়তে গিয়ে আটকে পড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৪৪ জন পড়ুয়া বাড়ি ফিরলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজপুর-সোনারপুর, বারুইপুর, নরেন্দ্রপুর, বজবজ, উস্তি, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং, মথুরাপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার ওই পড়ুয়ারা কোটাতে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে তাঁরা সেখানেই আটকে পড়েন। ৩ মে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেই পরীক্ষাও আপাতত বাতিল হয়ে গিয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল রাজ্য সরকার কোটায় আটকে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো ২৯ এপ্রিল সেখান থেকে বাসে করে রওনা দেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়ারা। শুক্রবার রাতে এই জেলার ৪৪ জন বাসে করে বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের পথের সাথী কোয়রান্টিন সেন্টারে এসে পৌঁছন। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আপাতত তাঁদের নিজেদের বাড়িতে ১৪ দিনের জন্য নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।
এ দিন কোটা থেকে ফেরা সোনারপুরের ছাত্র সৌম্যজিৎ নস্কর বলেন, ‘‘আমি একাদশ শ্রেণি থেকে কোটাতে পড়াশোনা করি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ১৮ মার্চ জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কোচিং নিতে আবার সেখানে যাই। ৩ মে কলকাতায় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষার সিট পড়েছিল। সেই মতো ২৮ এপ্রিল কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে বাবা ও আমি আটকে পড়ি।’’ এ দিকে পরীক্ষাও বাতিল হয়ে যায়। হস্টেলে খুব সমস্যার মধ্যে ছিলেন তাঁরা। টাকা পয়সা শেষ হয়ে গিয়েছিল। খাওয়ার সমস্যা হচ্ছিল। বাড়ি ফিরতে পেরে ভাল লাগছে বলে জানান তিনি। আরও এক পড়ুয়া সৃজা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কোচিং নিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। খাবারের অবশ্য তেমন সমস্যা ছিল না। রাস্তায় বেরোতে পারতাম না। ক্যান্টিনে খেতে গেলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হত। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। বাড়িতে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘জেলার ৪৪ জন ছাত্রছাত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। কারও জ্বর, সর্দি-কাশি বা অন্য শারীরিক সমস্যা না থাকায় অভিভাবকদের সঙ্গে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত তাঁদের বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে বলা হয়েছে সব কিছু নজরে রাখতে।’’
অন্য দিকে, কোটায় আটকে থাকা বনগাঁ মহকুমার ১০ জন ছাত্রও শনিবার বাড়ি ফিরেছেন। বিহারে আটকে পড়া হাবড়ার বাণীপুর নবোদয় বিদ্যালয়ের ২৪ জন ছাত্রছাত্রী ও ছ’জন কর্মীকে শনিবার সকালে হাবড়ায় ফিরিয়ে আনা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের ১৪ দিনের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।