Civic volunteer

Coronavirus in West Bengal: শবর মহিলার পাশে সিভিক ভলান্টিয়ার

বাড়াচ্ছেন সহযোগিতার হাত। যুবকের নাম মনোরঞ্জন মাহাতো। মনোরঞ্জন সিভিক ভলান্টিয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শালবনি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৬:৫৪
Share:

দীপালি ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র।

করোনা সংক্রমণ কমাতে বিধিনিষেধ চালু রয়েছে। সেই বিধিনিষেধ কার্যকর করতে রাস্তায় নেমেছেন তিনি। আবার এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়া মানুষের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন। বাড়াচ্ছেন সহযোগিতার হাত। যুবকের নাম মনোরঞ্জন মাহাতো। মনোরঞ্জন সিভিক ভলান্টিয়ার। খড়্গপুর লোকাল থানার ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত। শালবনির এক শবর মহিলা অর্থাভাবে ওষুধপত্র কিনতে পারছিলেন না। দীপালি ভুঁইয়া নামে বছর ছাপান্নর ওই মহিলা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। জানতে পেরে দীপালিকে তিন মাসের ওষুধপত্র কিনে দিয়েছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। খরচ হয়েছে প্রায় ৩,৬০০ টাকা। যেখানে তাঁর মাইনে মাসে ৯ হাজার টাকা।

Advertisement

দীপালি বলছেন, ‘‘এই খারাপ সময়ে আমাদের মতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন মনোরঞ্জন। আশীর্বাদ করি, অনেক বড় হোন।’’ মনোরঞ্জন অবশ্য নির্বিকার। তাঁর মতে, তিনি শুধু নিজের দায়িত্বটুকুই পালন করেছেন মাত্র, তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। তাঁর কথায়, ‘‘সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও পাশে থাকার চেষ্টা করব।’’ দু’জনে এক এলাকার বাসিন্দা নন। দীপালি থাকেন শালবনির গড়মালের বুড়িশোলে। এটি শবর গ্রাম। বেশিরভাগ পরিবারই হতদরিদ্র। পেশা বলতে দিনমজুরি। কার্যত লকডাউনের এই আবহে অনেক পরিবারের রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দীপালিদেরও তাই। মনোরঞ্জন থাকেন খড়্গপুর গ্রামীণের কলাইকুণ্ডার বুড়িশোলে। বছর আটেক আগে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পেয়েছেন তিনি।

ওই শবর মহিলার যে ওষুধপত্রের প্রয়োজন তা জানতে পারলেন কী করে? মনোরঞ্জন জানাচ্ছেন, বিধিনিষেধের কড়াকড়ি পর্বে তাঁরা কয়েকজন উদ্যোগী হয়ে শালবনির গড়মালের বিভিন্ন গ্রামে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। উদ্যোগীদের মধ্যে ছিলেন শেখর মাহাতো নামে এক যুবকও। শেখর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পড়ুয়া। বাড়ি গড়মালের তারাশুলিতে। কার্যত লকডাউনে বাড়িতে রয়েছেন তিনি। মনোরঞ্জন এবং শেখর দু’জনেই কুড়মি সম্প্রদায়ের। সম্প্রদায়ের এক সংগঠনের সূত্রে দু’জনের পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে। সেই থেকে বন্ধুত্ব। দিন কয়েক আগে বুড়িশোলে গিয়েছিলেন শেখর। তখনই জানতে পারেন, ওই মহিলার দুরবস্থার কথা। জানতে পারেন, অর্থাভাবে ওষুধপত্র কিনতে পারছেন না তিনি। মহিলার সমস্যার কথা মনোরঞ্জনকে জানান শেখর। মনোরঞ্জন ওই মহিলাকে ওষুধপত্র জোগানোর আশ্বাস দেন। আশ্বাস মতো দীপালির কাছে তিন মাসের ওষুধপত্র পৌঁছেছেন তিনি।

Advertisement

মনোরঞ্জন বলছিলেন, ‘‘এই সময়ে সকলেরই উচিত গরিব মানুষের পাশে থাকা। মাস ছয়েক আগে বিয়ে করেছি। খরচ বেড়েছে। তার আগে রোজগারের কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। জমানো টাকা থেকেই ওষুধপত্র কিনে দিয়েছি।’’ শেখর বলছেন, ‘‘দিন মজুরি করতেন। প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর ওই মহিলার রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দিন কয়েক আগে বুড়িশোলে গিয়েছিলাম। তখনই ওই মহিলার দুরবস্থার কথা জানতে পারি। জানতে পারি, ওঁর ওষুধপত্রের প্রয়োজন। মনোরঞ্জনকে বলি। মনোরঞ্জন সাহায্য করতে এককথায় রাজি হয়ে যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement