প্রতীকী ছবি।
অনুমতি ছাড়াই টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন। এমনকি নাম নথিভুক্তির জন্য অগ্রিম ‘অতিরিক্ত’ টাকা আদায়— আনন্দবাজার পত্রিকায় রেলশহরের এমন খবর প্রকাশিত হতেই প্রকাশ্য আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। খড়্গপুর শহর জুড়ে চলছে ব্যাঙের ছাতার মতো টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন। স্বাস্থ্য দফতর বলছে, কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
রেলশহরে টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করে গোপনে প্রচার চালিয়ে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে চলছে নাম নথিভুক্তিকরণ। প্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নাম। আনন্দবাজারে খবর প্রকাশিত হতে হুঁশ ফিরেছে শহরবাসীর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকার বলছেন, “বিষয়টি বেআইনি। বিষয়গুলি তো খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের জানা উচিত।” যদিও খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মধুমিতা বিশ্বাস দায় ঠেলে বলেন, “আমার তো মাঠেঘাটে কাজ করার কর্মী নেই। তা হলে আমি এ সব খবর পাব কী ভাবে?”
আজ, সোমবার থেকে খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টিকাকরণের আয়োজন হয়েছিল। মালঞ্চ বালাজি মন্দিরপল্লি এলাকার বাসিন্দা অরিন্দম চৌধুরী বলেন, “শনিবার ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১১৫০ টাকা দিয়ে নাম লিখিয়েছি। আমাকে ভিন্ন একটি সংস্থার রসিদ দেওয়া হয়। আনন্দবাজারে খবর দেখে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রশ্ন করলে বলা হয়, আপাতত শিবির স্থগিত করা হচ্ছে।” ওই ডায়াগনস্টিক সংস্থার মালিক সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রবিবার সকালেই জানতে পেরেছি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অনুমতি নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে শিবির বাতিল করেছি। ৭৮০ টাকায় কোভিশিল্ড কিনছি। বাড়তি খরচ থাকায় ১১৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে।” ওই রসিদ তাঁদের ফাঞ্চাইজির বলে তাঁর দাবি। পাশাপাশি মহকুমাশাসক তাঁদের শিবির আয়োজনের মৌখিক অনুমতি দিয়েছিলেন বলে জানাচ্ছেন সোনালি। যদিও মহকুমাশাসক আজমল হোসেন বলেন, “আমি কাউকে শিবিরের আয়োজনের অনুমতি দিইনি।’’ এ দিন বিকেলে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মহকুমাশাসক, এসডিপিও এবং আইসির উপস্থিতিতে অভিযান চলে। সেন্টারের অন্যতম মালিক আবীর বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান মহকুমাশাসক।
আগামী ৬ জুলাই শহরের নিউ সেটলমেন্টে তেলুগুদের সংগঠন ‘পিএনকে পরিষদ’ টিকাকরণ শিবির করেছে। সেখানে কোভিশিল্ডের ডোজ় প্রতি নেওয়া হচ্ছে ৯২০ টাকা। হাতে নেই সরকারি অনুমতিপত্র। সংগঠনের সম্পাদক সুরেন্দ্র রেড্ডি বলেন, “কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই শিবির করছি। ওঁরাই অনুমতির ব্যবস্থা করবেন। আমরা পুলিশকে জানাব।” কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার (পার্টনার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট) অর্পিতা পাল বলেন, “আমরা ওই শিবিরের অনুমতির জন্য নথি জমা দেব। ওই সংগঠনকেও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অনুমতি নেওয়ার কথা বলব।” রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন কোনও শিবিরের অনুমতি দেওয়া হয়নি।”