প্রতীকী ছবি
করোনার ভয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এক নার্সকে ভাড়া বাড়ি ছাড়তে হল। রবিবার অরণ্যশহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুপাড়ার এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে এই সঙ্কটের মুহূর্তে চিকিৎসক ও নার্সদের ভূয়সী প্রশংসা করছেন, তাঁদের পাশে থাকার আর্জি জানাচ্ছেন, সেখানে এমন আচরণ কেন।
রিম্পা মণ্ডল পাল নামে ওই নার্স গত ডিসেম্বরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বদলি হয়ে ঝাড়গ্রামে আসেন। সরকারি আবাসন না পেয়ে জানুয়ারিতে বাবুপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নেন রিম্পা। ওই বাড়িতে থাকেন বাড়ির মালকিন ঝর্না নায়েক ও তাঁর ছ’বছরের ছেলে। ঝর্নার স্বামীর কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। রিম্পার দাবি, ঝর্না প্রথমে খুবই ভাল ব্যবহার করতেন। কিন্তু করোনার জেরে লকডাউন শুরু হতেই রিম্পার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন তিনি। রিম্পাকে বাড়ি ছাড়তেও বলেন। রবিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার কাছে লিখিত অভিযোগ জানান রিম্পা। বিকেলে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ গিয়ে ঝর্নাকে সতর্কও করে। তবে শেষ পর্যন্ত রিম্পাকে বাড়ি ছাড়তে হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই নার্সকে অস্থায়ী ভাবে সরকারি আবাসনে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এ দিনই তিনি আবাসনে উঠে যাচ্ছেন।
রিম্পা বলেন, ‘‘দিনরাত এক করে সেবা করছি। বাড়ি ফিরে নিত্যদিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলাম না। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হই। সাধারণের একাংশের এমন মনোভাবে মর্মাহত হচ্ছি।"
ঝর্নার অবশ্য দাবি, ‘‘কমন স্পেসে রিম্পা থাকত। ইদানিং রিম্পার স্বামীও থাকছিলেন। করোনার জেরে তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু ও মিথ্যা অভিযোগ করে পুলিশ এনে হেনস্থা করল।’’
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। এই সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের মনোবল বাড়ানো প্রয়োজন।’’