প্রতীকী ছবি।
আশঙ্কাই সত্যি হল। ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরা শুরু হতেই নতুন করে করোনা আক্রান্তের হদিস মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরে। আক্রান্ত যুবক মুম্বই ফেরত। মঙ্গলবার পর্যন্ত এ জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০। মুম্বই ফেরত ওই যুবক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বুধবার ওই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১।
আক্রান্ত যুবক মেদিনীপুর সদর ব্লকের মহাতাবনগরের এলাকার বাসিন্দা। এ দিনই তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি এখন সেখানে চিকিৎসাধীন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘মেদিনীপুর সদর ব্লকের এক যুবকের করোনা ধরা পড়েছে। ওই যুবক মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন।’’ বছর উনত্রিশের ওই যুবক মুম্বইয়ে জরির কাজ করতেন। লকডাউনে সেখানে আটকে পড়েছিলেন। বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হতে তিনি বাড়ি ফেরেন। তাঁর সঙ্গে আরও ১১ জন সহকর্মীও মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরেছেন।
গত শনিবার ওই শ্রমিকেরা মুম্বই থেকে ফেরেন। নামেন খড়্গপুর স্টেশনে। খড়্গপুর থেকে তাঁরা আসেন মেদিনীপুরের লেভেল- ১ করোনা হাসপাতালের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে। করোনা পরীক্ষার জন্য এখানে তাঁদের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। জানা যাচ্ছে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের মহাতাবনগরের এক এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক ছিলেন স্থানীয় কোয়রান্টিন সেন্টারে। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছিল। এ দিন সকালে রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।
ওই যুবকের বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ে রয়েছে। বৃদ্ধা মায়ের বয়স ৬১ বছর, স্ত্রীর ২৭ বছর, ছেলের ১১ বছর এবং মেয়ের ৯ বছর। পরিস্থিতি দেখে এই চারজনেরই করোনা পরীক্ষা করা হতে পারে। ওই যুবকের সঙ্গে স্থানীয় কোয়রান্টিন সেন্টারে ছিলেন আরও ১২ জন। তাঁদের সকলেরও করোনা পরীক্ষা করা হতে পারে। ওই যুবকের করোনার কোনও উপসর্গই ছিল না। জ্বর, কাশি ছিল না। ছিল না শ্বাসকষ্টও। গলা ব্যথা, ডায়েরিয়াও ছিল না। এখন মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং গুজরাত ফেরত সকলেরই করোনা পরীক্ষা করা হবে। সেই মতোই ওই যুবকের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে মুম্বই যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না! জেলায় করোনার প্রবেশ ঘটেছে মাস দেড়েক আগে। ওই সময়ে মুম্বই ফেরত দাসপুরের এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই যুবকই ছিলেন এ জেলার প্রথম করোনা আক্রান্ত। লার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে। অযথা উদ্বিগ্ন না হয়ে এখন সতর্ক এবং সচেতন থাকতে হবে।’’