প্রতীকী ছবি।
কলেজ পড়ুয়াদের করোনা টিকাকরণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।
আজ, মঙ্গলবার থেকে মেদিনীপুর কলেজে টিকাকরণ শুরু হওয়ার কথা। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা জানাচ্ছেন, যাবতীয় প্রস্তুতি সারা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও টিকাকরণ শুরু হওয়ার কথা। শুরুতে তৃতীয় সেমিস্টারের পড়ুয়াদের টিকা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার ৬৯৫ জন পড়ুয়াকে ও বুধবার ৬৩৪ জন পড়ুয়াকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। পড়ুয়াদের জানানো হয়েছে, পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। আধার কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। কেশপুর কলেজেও মঙ্গলবার থেকে টিকাকরণ শুরু হওয়ার কথা। কমার্স কলেজে ৪ অক্টোবর থেকে। মহিলা কলেজে (গোপ কলেজ) ৪ অক্টোবর থেকে ও শালবনি কলেজে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে টিকাকরণ শুরু হওয়ার কথা।
জানা যাচ্ছে, সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি করতে ইতিমধ্যে জেলাস্তরে এক বৈঠক হয়েছে। কলেজ ভিত্তিক টিকাকরণ কর্মসূচির দিন ঠিক হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসকের দফতর থেকে দিনক্ষণের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নিখুঁত প্রস্তুতি সারার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। সেই মতো প্রস্তুতি সারা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্দেশ মেনেই এই পদক্ষেপ। অগ্রাধিকার শ্রেণিভুক্তদের টিকাকরণ হচ্ছিল। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ পড়ুয়াদের টিকাকরণ হবে। প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে।’’ কবে, কোন বর্ষের পড়ুয়াদের টিকা দেওয়া হবে, কলেজগুলি সেই সূচি ঠিক করেছে। সূচির কথা পড়ুয়াদের জানানোও হয়েছে। চলতি মাসেই জেলার ২৭টি কলেজে এই করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে যে সমস্ত এলাকায় এখন বানভাসি পরিস্থিতি সেখানে এই কর্মসূচি শুরু করতে সময় নেওয়া হতে পারে। জেলার টিকাকরণের নোডাল অফিসার তথা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের নির্দেশেই কলেজগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য এই টিকাকরণ কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে কলেজগুলি খোলার পরিকল্পনা হবে। আমরা পুজোর আগেই জেলার কলেজগুলির পড়ুয়াদের এই টিকাকরণ দিয়ে দেব।”
বেলদা কলেজেও পড়ুয়াদের টিকাকরণের শিবির শুরু হবে। আঠারো পেরিয়েছে এমন পড়ুয়ারা এই টিকা পাবেন। আজ, মঙ্গলবার থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে ওই শিবির। নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, তাদের পক্ষ থেকে দু’জন কর্মী টিকাকরণের জন্য থাকবেন। এছাড়াও অন্য কর্মী ও মেডিক্যাল অফিসারেরাও থাকবেন শিবিরে। পুরো বিষয়টি আয়োজনের দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের। কেশিয়াড়ির সরকারি জেনারেল ডিগ্রি কলেজও পড়ুয়াদের টিকাকরণের জন্য শিবিরের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ১ অক্টোবর ওই শিবির হবে কলেজে।
কলেজের এই শিবিরের জেরে হাসপাতালে সাধারণের টিকাকরণে প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। যেমন বেলদা কলেজে ৪,২০০ জন পড়ুয়া। সেখানকার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল বলেন, “আমাদের কাছে ৩০০ ভায়াল প্রতিষেধক রয়েছে। সোমবার ২৫০টি ভায়াল খরচ হচ্ছে। মঙ্গলবার কলেজের জন্য ৭০টি ভায়াল রাখা হয়েছে। ওই দিন তাই সাধারণ মানুষকে প্রতিষেধক দিতে পারব না। মঙ্গলবার বিকেলে নতুন করে প্রতিষেধক পেলে বুধবার হাসপাতালে ও কলেজে টিকাকরণ হবে।” ডেবরার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আরিফ হাসান জানান, ডেবরা কলেজে ৩,৩০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই আগে প্রতিষেধক নিয়ে নিয়েছে। আপাতত প্রতিষেধক রয়েছে। মঙ্গলবার কলেজ ও হাসপাতাল দু’জায়গাতেই টিকা দেওয়া যাবে। ফের প্রতিষেধক পেলে তবেই বুধবার টিকাকরণ হবে। খড়্গপুর শহরে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আপাতত প্রতিষেধক রয়েছে। বুধবার খড়্গপুর কলেজে টিকাকরণ শিবির হলে সমস্যা হবে না।”
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদার আশ্বাস, “কলেজে টিকাকরণের শিবির সুষ্ঠুভাবেই হবে। নিয়মিত প্রতিষেধক আসায় আপাতত জেলায় প্রতিষেধকের সঙ্কট নেই।”